বিক্ষোভে চালকেরা

বিক্ষোভকারী চালকদের অভিযোগ, দার্জিলিঙে বন্‌ধ শুরু হতেই তার আঁচ এসে পড়ে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। সিকিমের চালকদের কিছু না বলা হলেও কিরণে, চিত্রে, লোহাপুল, তিস্তাবাজার, কালীঝোরাতে অন্য রাজ্যের চালকদের মারধর করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০২:৩৪
Share:

আটক: সিকিমের গাড়ি যেতে বাধা সমতলের চালকদের। শুক্রবার শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

সিকিমের লাইফ লাইন বলে পরিচিত ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে বাধাহীন যাতায়াতের দাবিতে সরব হলেন সমতলের গাড়ি চালকরা। শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ির চম্পাসারি, দার্জিলিং মোড়, বাগডোগরা, এনজেপি-সহ বিভিন্ন প্রান্তে সিকিম নম্বরের গাড়ি আটকে দেন তাঁরা। পাশাপাশি সিকিম রাষ্ট্রীয় পরিবহণ দফতরের গেটে তালাও ঝুলিয়ে দেন। এর জেরে বিপাকে পড়েন সিকিম থেকে নামা বহু যাত্রী। অটো, টোটো ধরে গন্তব্যে পৌঁছোতে হয় তাঁদের। আন্দোলনে সামিল ছিলেন পর্যটন সংগঠন এতোয়ার সদস্যরাও।

Advertisement

বিক্ষোভকারী চালকদের অভিযোগ, দার্জিলিঙে বন্‌ধ শুরু হতেই তার আঁচ এসে পড়ে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। সিকিমের চালকদের কিছু না বলা হলেও কিরণে, চিত্রে, লোহাপুল, তিস্তাবাজার, কালীঝোরাতে অন্য রাজ্যের চালকদের মারধর করা হচ্ছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা বলেন, ‘‘সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং আলাদা রাজ্যকে সমর্থন করায়, ওঁর রাজ্যের চালকরা সুবিধা পাবেন। আর আমরা না খেয়ে মরব, এটা হতে পারে না।’’

বৃহস্পতিবারই গোর্খাল্যান্ডকে সমর্থন করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং। রাজ্যের লাইফলাইন বলে পরিচিত ১০ জাতীয় সড়ক পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে তিন দশক ধরে কী সমস্যায় পড়ছে তাও চিঠিতে লিখেছেন তিনি।

Advertisement

এ দিন জংশনের সিকিম পরিবহণ দফতরে ‘সিকিমে পর্যটকরা যাবেন না’ এমন একটি পোস্টার ঘিরে উত্তেজনা বাড়ে। খবর পেয়ে তৃণমূলের কাউন্সিলর নান্টু পাল, সঞ্জয় পাঠকেরা ঘটনাস্থলে যান। একসময় চম্পাসারির ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে উত্তেজনা ছড়ায়। সিকিম নম্বরের গাড়ি, বাস থেকে যাত্রী ছাড়াও আনাজ, খাবারের রসদও নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। ফাঁকা গাড়ি-বাসকে সিকিমে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেন চালকেরা।

পরিস্থিতি বুঝে গ্যাংটকেও পুলিশ-প্রশাসন ও পর্যটন দফতরের কর্তারা বৈঠকে বসেন। কালিম্পং জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাস্তা স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ জানায়। সমস্যা মেটাতে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও হস্তক্ষেপ করেন। বিকাল চারটেয় আন্দোলন থামলে কয়েকশো যাত্রী নিয়ে সিকিমের ১২টি বাস রওনা হয়। পর্যটন মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, ‘‘চালকদের ক্ষোভ হওয়াটা স্বাভাবিক। পর্যটক-যাত্রীরা যাতে সমস্যায় না পড়ে, তা দেখা হয়েছে। সবাই গাড়ি চালাবেন।’’

এই প্রসঙ্গে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শদাতা (আইন) কে টি গ্যায়েলসন বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক স্বাভাবিক না রাখলে আমাদেরই মুশকিল। সমস্যা হলে তা আলোচনায় মিটবে।’’

এতোয়ার সভাপতি সম্রাট সান্যাল জানান, দার্জিলিঙের পরিস্থিতির জেরে সিকিমে পর্যটকেরা যাচ্ছেন। সেখানে ওই রাজ্যের সরকার ব্যবস্থা না নিলে তো ক্ষোভ তো ছড়াবেই। তৃণমূল প্রভাবিত বাগডোগরার চালক সংগঠনের সভাপতি রাজা দে, এনজেপি সম্পাদক বাপি সিংহ’রা বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। সমস্যা হলে আবার আমরা রাস্তায় নামব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন