রাজবংশী ঢোল-মুখোশে মণ্ডপ সাজ

অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলায় তফসিলি জাতি এবং আদিবাসীর সংখ্যা প্রচুর। তার মধ্যে উপজাতির সংখ্যা কুড়িটি। তাঁদের বাস জেলার উত্তর অংশ জুড়ে। জেলার দক্ষিণ অংশ এবং কোচবিহার জুড়ে যাঁদের বাস, তাঁরা হলেন রাজবংশী। তাঁদের নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলায় একটি মিশ্র সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২১
Share:

অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলায় তফসিলি জাতি এবং আদিবাসীর সংখ্যা প্রচুর। তার মধ্যে উপজাতির সংখ্যা কুড়িটি। তাঁদের বাস জেলার উত্তর অংশ জুড়ে। জেলার দক্ষিণ অংশ এবং কোচবিহার জুড়ে যাঁদের বাস, তাঁরা হলেন রাজবংশী। তাঁদের নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলায় একটি মিশ্র সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।

Advertisement

সেই মিশ্র সংস্কৃতিই এ বার পুজোর থিম পান্ডাপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির। প্যান্ডেলের মুখ্য কারিগর বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “রাজবংশীদের পুজো-আচ্চায় ঢোল সর্বত্র ব্যবহার হয়। সেই ঢোলের একটা বড় সংস্করণ আমাদের মণ্ডপ। মণ্ডপ জুড়ে থাকবে রাজবংশী সমাজের ধর্ম এবং সংস্কৃতির নানা বিষয়।”

ঢোলের গায়ে আঁকা দেবদেবীর মূর্তিকে পুজো করেন রাজবংশীরা। সেই গোলাকৃতি ঢোলকেই বড় রূপ দেওয়া হচ্ছে। তার গায়ে আঁকা থাকবে বৃষহরা, তিস্তাবুড়ি, চৌদ্দচৌকিয়া, সন্ন্যাসীরাজা, কাঁইতকুড়া, হরিবল, মাছমেছেনির প্রতিকৃতি। মণ্ডপের মধ্যে অব্যবহৃত শুকনো গাছ, ফেলে দেওয়া ধাতু, ফাইবার গ্লাস দিয়ে তৈরি হচ্ছে ছ’টি ভাস্কর্য। মণ্ডপে দুশোটি মুখোশ থাকবে। সেগুলি তৈরি হচ্ছে শুকনো লাউ, পোড়ামাটি এবং কাঠ দিয়ে। এ ছাড়া থাকবে রাজবংশী সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য ছবি। ব্যবহার হচ্ছে ফাঁপা মাকলা বাঁশ। সেই বাঁশের ওপর কারুকার্য্য করে নানা ধরনের মূর্তি তৈরি হচ্ছে। পুজো কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন যে এক সময় তিস্তা নদীতে বাইচ খেলা হতো। প্রচুর নৌকো চলত। যখন তিস্তা সেতু হয়নি তখন নৌকোই তিস্তা পারাপারের প্রধান মাধ্যম ছিল। তিস্তা নদীকে নিয়ে রাজবংশী সমাজে অনেক ভাওয়াইয়া গান বাঁধা হয়েছে। সেই হারিয়ে যাওয়া নৌকো দিয়ে এদের মণ্ডপে ঢোকার গেট তৈরি হচ্ছে।

Advertisement

প্রতিমাতেও এঁরা অভিনবত্ব আনছেন। ছোট ছোট কাঠের টুকরো দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। পুজো কমিটির সদস্যরা দাবি করছেন, তাঁদের এ বারের মণ্ডপ হবে এক অসাধারণ শিল্পকলার সমন্বয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন