বন্যার আতঙ্কে দিশেহারা

পাহাড়-সমতলে রাতভর বৃষ্টি। তারই জেরে ফের বন্যার ভ্রূকুটি উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়। কোনও নদীতে লাল সঙ্কেত, কোনও নদীতে হলুদ। বৃষ্টির জেরে সব্জির দাম লাগামছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০১:৫৯
Share:

ঝুঁকির পথ। ছেলেকে আগলে মা। শালকুমার হাটে। ছবি: নারায়ণ দে।

পাহাড়-সমতলে রাতভর বৃষ্টি। তারই জেরে ফের বন্যার ভ্রূকুটি উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়। কোনও নদীতে লাল সঙ্কেত, কোনও নদীতে হলুদ। বৃষ্টির জেরে সব্জির দাম লাগামছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। প্রশাসনেক তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বাড়ছে জল

Advertisement

ভুটান পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে নদী গুলির জল স্তর বাড়ছে। আলিপুরদুয়ারের কাছে তোর্সায় লাল সঙ্কেত জারি হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের কালজানি ও সঙ্কোশ নদীতে হলুত সঙ্কেত জারি হয়েছে। জল বাড়ছে ধূপগুড়ির জলঢাকা, ডুডুয়া, গিলান্ডি ফালাকাটার মুজনাই, বিরকিটি নদীর জল। জলঢাকা নদীতে হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির মালবাজারে মাল নদীতে নেমে প্রবল স্রোতে তলিয়ে গিয়েছেন কুজি মুন্ডা (৫৫) নামে এক ব্যক্তি। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।

বন্দি অনেকে

তোর্সা নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় টাকাগাছ, ঘুঘুমারি সহ কোচবিহার পুরসভার একটি অংশে জল ঢুকে যায়। অন্তত ৩০০ পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকেই ঘর ছেড়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। প্লাবিত হল ডুয়ার্সের বানারহাট, বিন্নাগুড়ির প্রায় ১২০০ বাড়িঘর। ময়নাগুড়ির পদমতি ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়াও দোহমনি এলাকার বেশ কিছু এলাকা নতুন করে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ৷ উত্তর পদমতি এলাকায় নতুন করে প্রচুর কৃষি জমি নদী গর্ভে চলে গিয়েছে ৷ তিনটি এলাকায় গতকাল রাত থেকে আজ পর্যন্ত বেশ কিছু পরিবারকে উঁচু জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া ইস্টার্ন বাইপাসের হাতিয়াডাঙ্গায় নদীর চরে ৩০০টি ঘরে জল ঢুকে গিয়েছে।

আগুন সব্জি

টানা বৃষ্টিতে কোচবিহারের বিস্তীর্ণ এলাকায় সব্জির জোগানে টান পড়েছে। খেতের গাছের গোড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সব্জির দামের পারদ চড়ছে । ব্যবসায়ীরা জানান, লঙ্কা কেজি প্রতি ৮০-১০০ টাকা, ঝিঙে ২৫-৩০ টাকা, বেগুন ৩০-৪০ টাকা, বরবটি ২৫-৩০টাকা, রসুন ১২০-১৫০ টাকা, পেঁয়াজ ২০ টাকা, স্কোয়াশ ২৫-৩০ টাকা, মূলো ৫০-৬০ টাকা, করলা ২৫-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একটি চালকুমড়ো ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে লাউ, পুঁই, ঢেঁকি সহ বিভিন্ন শাকের দামও। অথচ এক সপ্তাহ আগেও ওই সব সব্জির দাম গড়ে ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ কম ছিল।

ভাঙন শুরু

ভাঙনের আতঙ্কে কোচবিহারের বহু এলাকা। পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কিছু বাড়ি ভাঙনের মুখে। গীতালদহ ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান আমিনুল হক জানান, বাঁধের কুঠি, ঘোষপাড়ায় ২০টি বাড়ির ভিটেমাটি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। কয়েকশো বিঘা কৃষি জমি ভেঙে গিয়েছে। নদীতে জল বেড়ে ভাঙন তীব্র আকার নিয়েছে। প্রায় ১৫০টি বাড়ি ভাঙনের মুখে। আমিনুল বলেন, “বাসিন্দারা ঘুমোতে পারছেন না। প্রশাসনকে সব জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন