উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএফআই ও ছাত্র পরিষদের যৌথ মিছিল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এ বার বিরোধী জোটের মিছিল হল দেশে ও রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে।
সোমবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআইয়ের উদ্যোগে ওই মিছিল হয়। মূলত হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রোহিত ভেমুলার অস্বাভাবিক মৃত্যুর বিরুদ্ধে সরব হয়ে দোষীদের শাস্তির দাবিতে এ দিন তারা মিছিল করে। মিছিলে সামিল হন ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পরিক্রমা করে মিছিল প্রশাসনিক ভবনের কাছে পৌঁছলে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সভাও হয়। রোহিত ভেমুলার ঘটনা ছাড়া জেএনইউ কাণ্ড নিয়েও সরব হন বিরোধী জোটের ওই দুই ছাত্র সংগঠনের নেতারা।
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস, সৌরভ সরকারের মতো বাম ছাত্র সংগঠনের নেতারা। সিপি’র তরফে মহম্মদ আজিজ, মহম্মদ ইমরানের মতো ছাত্র নেতারাও ছিলেন। এসএফআই জেলা সম্পাদক বলেন, ‘‘যৌথ ভাবে এ দিন মিছিল হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বিজেপি’র মেরুকরণ চলছে। মিথ্যে মামলায় জেএনইউ কাণ্ডে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে রোহিত ভেমুলাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’ শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য নিয়েও সরব হন ওই ছাত্রনেতারা। রাজ্যে বিজেপি, তৃণমূল উৎখাত করার দাবিতেও মিছিলে স্লোগান দিয়েছেন অনেকেই। ছাত্র পরিষদের তরফেও জানানো হয়, দেশে এবং রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে কুশাসন চলছে। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রোনাল্ড দে এ দিন মিছিলে না থাকলেও পরে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য ঠেকাতেই এ দিন যৌথ ভাবে মিছিল করা হয়েছে।’’
রাজ্যে নির্বাচন পরিস্থিতিতে এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে জোটপন্থী বাম এবং ডান দুটি ছাত্র সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এই মিছিলকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই। বিশেষ করে রোহিত ভেমুলা বা কানহাইয়া কুমারের বিষয়টি সামনে রেখে মিছিল করা হলেও রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনে অরাজক পরিস্থিতির অভিযোগ তুলেও এ দিন আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিয়েছেন। বক্তব্য রেখেছেন।
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ল’মোড় থেকে বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ মিছিল শুরু হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন বিভাগের সামনে দিয়ে মিছিল ঘোরে। মিছিলের সামনে ফেস্টুনেও এসএফআই এবং ছাত্র পরিষদের তরফে হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। দুই ছাত্র সংগঠনের পতাকাও এ দিন মিছিলে মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় অবশ্য বিরোধী ছাত্র সংগঠনদের ওই মিছিল নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএফআই বা ছাত্র পরিষদের কোনও অস্তিত্ব নেই। বহিরাগতরা কী করছে, গুরুত্ব দিতে চাই না।’’