কালিয়াগঞ্জ পুরসভা

অভিমানে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা অরুণের

চেয়ারম্যানের পদ ধরে রাখতে,অনুগামী ছয় কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ই-মেল পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও তৃণমূলের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।

Advertisement

গৌর আচার্য

কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০১:৫৩
Share:

অরুণ দে সরকার

চেয়ারম্যানের পদ ধরে রাখতে,অনুগামী ছয় কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ই-মেল পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও তৃণমূলের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি। তাই পদ হারানো নিশ্চিত বুঝে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন কালিয়াগঞ্জ পুরসভার কংগ্রেস চেয়ারম্যান অরুণ দে সরকার। সেইসঙ্গে, সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান কার্তিকচন্দ্র পালকেই চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়ায় রাজনীতি থেকেই সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন অরুণবাবু।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে অরুণবাবু তাঁর অনুগামী ছয় কংগ্রেস কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকেই তিনি স্বেচ্ছায় চেয়ারম্যানের পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথাও জানিয়ে দেন। অরুণবাবুর আক্ষেপ, যে সাত কাউন্সিলর তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কার্তিকবাবু সহ ছয় কাউন্সিলরকে তিনি এক বছর আগে পুরভোটে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দেন। তাঁর কথায়, ওঁরা যে আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন, তা এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের কাছ থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে অপমানিত বোধ করছি। তা ছাড়া তৃণমূলের তরফে কার্তিকবাবুকে পরবর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরদের সমর্থন হারানোয় তাই স্বেচ্ছায় পদ ও রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

প্রসঙ্গত, অরুণবাবু এ দিনই চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁকেই আস্থা ও অনাস্থা প্রমাণ করার জন্য তলবিসভা ডাকতে হবে ও ওই সভার আগে তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত হবে না বলে প্রশাসনের তরফে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

শুক্রবার দিনভর পুরসভার কর্মী ও বাসিন্দাদের একাংশ অরুণবাবুর সঙ্গে দেখা করে তাঁদের হতাশা প্রকাশ করেন। তৃণমূল প্রভাবিত কালিয়াগঞ্জ পুর কর্মচারী সুরক্ষা সমিতির সম্পাদক তপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘অরুণবাবুর মতো একজন অভিজ্ঞ ও প্রবীণ চেয়ারম্যানকে পদ থেকে সরে যেতে হবে ভেবে পুরসভার সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীদের খারাপ লাগছে।’’ কংগ্রেস প্রভাবিত পুর কর্মচারী শ্রমিক সংগঠনের সহকারী সভাপতি শুভেন্দু সাহার দাবি, পুরসভার সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীরা অরুণবাবুর পাশে রয়েছেন।

১৭ আসনের ওই পুরসভার দুই তৃণমূল কাউন্সিলরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সাত কংগ্রেস কাউন্সিলর গত বুধবার অরুণবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। পরদিন কার্তিকবাবুর নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা কলকাতায় শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। কার্তিকবাবুর দাবি, ‘‘উন্নয়নের স্বার্থেই তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ দিন রাজ্য তৃণমূলের তরফে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও সৌরভ চক্রবর্তী তাঁকে পরবর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলানোর নির্দেশ দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন