Tourist Spots

রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘সেরা পর্যটন গ্রাম’-এর শিরোপার দৌড়ে এ বার কালিম্পংয়ের আট জনপদ

সরকারি ভাবে রাজ্যের নতুন জেলা কালিম্পং প্রশাসন আটটি পাহাড়ি গ্রামকে ‘মডেল ভিলেজ’ হিসাবে বাছাই করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের মধ্যে প্লাস্টিকমুক্ত গ্রামকে সামনে রাখা হয়েছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৩ ০৭:১৬
Share:

‘মডেল ভিলেজ’ হিসাবে বাছাই হওয়া চুইখিম। নিজস্ব চিত্র।

রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (ইউএন-ডব্লুউটিও) প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একাধিক ‘সেরা পর্যটন গ্রামে’র শিরোপা দেয়। তাতে শামিল হওয়ার দৌড়ে এ বার রয়েছে কালিম্পংও জেলার পাহাড়ি গ্রামও। সরকারি সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের মাধ্যমে রাজ্যের জেলা স্তর থেকে আবেদন পৌঁছে দিতে হয়ে ইউএন-ডব্লুউটিও’র দফতরে। তাতে অংশগ্রহণকারী গ্রামের পর্যটনের বিকাশ, আর্থিক পরিস্থিতি, উন্নয়ন, পরিবহণ ব্যবস্থা, পরিকাঠামো, লিঙ্গ বৈষম্য, মহিলাদের উত্তরণ, কর্মসংস্থান, ডিজ়িটালাইজ়েশনের উন্নতির মতো নানা বিষয় দেখার পর গ্রামটিকে বাছাই করা হয়। এ বছরে তালিকায় স্থান পাওয়া গ্রামের নামগুলি সৌদি আরবে গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব পর্যটন সংস্থার এক অনুষ্ঠানে ঘোষিত হয়েছে। এখন আগামী বছরের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সরকারি ভাবে রাজ্যের নতুন জেলা কালিম্পং প্রশাসন আটটি পাহাড়ি গ্রামকে ‘মডেল ভিলেজ’ হিসাবে বাছাই করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের মধ্যে প্লাস্টিকমুক্ত গ্রামকে সামনে রাখা হয়েছে। এর থেকে একটি গ্রামকে বাছাই করে বিশ্ব পর্যটন সংস্থার কাছে আবেদন করা হবে বলে স্থির হয়েছে। স্বীকৃতি মিললে বিশ্ব জুড়ে প্রচারের সঙ্গে ও রাষ্ট্রপুঞ্জের আর্থিক সাহায্যে মিলবে গ্রামীণ পর্যটনের উন্নয়নে। কালিম্পং জেলায় আপাতত ১ নম্বর ব্লকে পানবুডারা ও চুইখিম, লাভা ব্লকে নোকডারা ও ইচ্ছেগাঁও, পেডং ব্লকে রিশপ ও মুলখাগড়া, গরুবাথান ব্লকে সুন্দরবস্তি ও পারেনটারকে ‘মডেল ভিলেজ’ হিসাবে বাছাই করা হয়েছে।

Advertisement

‘মডেল ভিলেজ’ হিসাবে বাছাই হওয়া ইচ্ছেগাঁও। নিজস্ব চিত্র।

কালিম্পঙের জেলাশাসক আর বিমলা ইতিমধ্যে জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক এবং বিডিওদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। রাজ্য প্রশাসনের এক সচিব পর্যায়ের কর্তার কথায়, ‘‘এই শিরোপা গ্রামীণ পর্যটনে অসাধারণত্বের ছাপ রাখা গ্রামকে দেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ইকো-টুরিজ়ম বা এলাকার অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশের দিকে নজর রেখে সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে যেখানে কাজ হচ্ছে, সেখানেই ‘বেস্ট টুরিজ়ম ভিলেজ’-এর স্বীকৃতি দিচ্ছে বিশ্ব পর্যটন সংস্থা।

প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জানান, ‘সেরা পর্যটন গ্রামে’র লড়াইয়ে থাকা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গ্রামগুলির জন্য বিভিন্ন সুযোগও রাখা হয়েছে। শিরোপা না পেলেও তালিকায় থাকা গ্রামগুলিতে আগামী দিনের শিরোপা-যোগ্য করে তুলতে সাহায্য, বিশেষজ্ঞ পরামর্শ, সরকারি-বেসরকারি যৌথ প্রচেষ্টায় পর্যটন বিকাশে সাহায্যের কথা বলা হয়েছে। ২০২১ সালে তামিলনাড়ুর পোচমপল্লি ভারতের ‘সেরা পর্যটন গ্রামে’র সম্মান পায়। ২০২২ সালে নাগাল্যান্ডের খোনমা গ্রাম চিহ্নিত হয়েছে। সেখানে এ বার এ রাজ্যের কালিম্পঙের পাহাড়ি গ্রামকে বাছাই করার জন্য পাঠানো হবে।

Advertisement

সম্প্রতি রাজ্যের শীর্ষ প্রশাসনের তরফেও গ্রামীণ পর্যটনের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলাশাসকদের কাছে নির্দেশ এসেছে। উত্তরববঙ্গের পাহাড়, জঙ্গল বা চা বাগানে ঘেরা জেলার সঙ্গে এ বার কলকাতা লাগোয়া এলাকায় গ্রামীণ পর্যটনেও জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জাতীয় সড়কের ধারে রাজস্থান, গুজরাত পর্যটনের মতো মডেল গ্রাম তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে খাবার, সংস্কৃতি, হস্তশিল্পের মতো বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকবে। পর্যটন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গ্রামীণ পর্যটনকে তুলে ধরার জন্য দেশ জুড়ে প্রক্রিয়া চলছে। তাতে রাজ্যও বিভিন্ন ভাবে শামিল হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন