মালদহে বিক্ষোভ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের

ভাতা বন্ধের অভিযোগ নিয়ে পথে নামল বামেরা

সাত মাস ধরে ইংরেজবাজার পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভাতা বন্ধ রয়েছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং প্রতিবন্ধীদের। এই অভিযোগ তুলে পথে নামলেন পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলররা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৬ ০৮:২৪
Share:

পুরসভা ঘেরাও করে বিক্ষোভ উপভোক্তাদের। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

সাত মাস ধরে ইংরেজবাজার পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভাতা বন্ধ রয়েছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং প্রতিবন্ধীদের। এই অভিযোগ তুলে পথে নামলেন পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলররা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে বাম কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে পুরসভা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল‌েন উপভোক্তারা। ঘণ্টা খানেক ধরে চলা এই বিক্ষোভের জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরসভা চত্বরে। পরে ইংরেজবাজার শহরের পোষ্টঅফিস মোড় অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ। এই অবরোধের জেরে শহরজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

ইংরেজবাজারের বিধায়ক তথা কাউন্সিলর নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘ইংরেজবাজার পুরসভার সমস্ত ওয়ার্ডেরই উপভোক্তারা বার্ধক্য, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। বিগত সাত মাস ধরে তাঁরা কোনও ভাতা পাচ্ছেন না। তবুও কোনও হেলদোল দেখাচ্ছেন না পুরসভার চেয়ারম্যান। তিনি লাইভ সার্টিফিকেটের দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষের ভাতা আটকে রেখেছেন। এরই প্রতিবাদে আমরা এ দিন রাস্তায় নেমেছি।’’

Advertisement

যদিও গ্রাহকদের ভাতা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি করেছেন পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছরই উপভোক্তাদের লাইভ সার্টিফিকেট জমা নেওয়া হয় পুরসভায়। আর সেই লাইভ সার্টিফিকেট দেখার পরই ভাতা দেওয়া হয় তাঁদের। কারণ বিগত দিনে দেখা গিয়েছে মৃত ব্যক্তিদের নাম করে অনেকেই ভাতা তুলেছেন। তাই লাইভ সার্টিফিকেট সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। খুব শীঘ্রই গ্রাহকরা ভাতা পেয়ে যাবেন।’’

বিরোধীদের জন্যই ভাতা আটকে রয়েছে বলেও পাল্টা দাবি করেন কৃষ্ণেন্দু বাবু। তাঁর কথায়, ‘‘নির্বাচনের সময় ভাতা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করা হচ্ছে বলে কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিল বিরোধীরা। তাঁদের বাধাতেও উপভোক্তারা সরকারি ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।’’

ইংরেজবাজার পুরসভার অধীনে ২৯টি ওয়ার্ড রয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২০ হাজার উপভোক্তা বিধবা, বার্ধক্য এবং প্রতিবন্ধী ভাতা পান। প্রতিটি ওয়ার্ডেই হাজার দেড়েক করে উপভোক্তা রয়েছেন। এখানে বয়স্কদের মাসিক ৪০০ টাকা, বিধবা এবং প্রতিবন্ধীদের ৬০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এছাড়া যাঁদের বয়স ৮০ বছরের বেশি তাঁদের ১০০০ টাকা করে দেওয়া হয়। পুরসভা থেকে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দেওয়া হয়। গত ডিসেম্বর মাস থেকেই উপভোক্তারা সরকারি ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন বলে অভিযোগ। পুরসভার চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী পরিকল্পিত ভাবে সাধারণ মানুষের ভাতা আটকে রেখেছেন বলেও অভিযোগ বিরোধী কাউন্সিলরদের।

নীহাররঞ্জনবাবুর অভিযোগ, কৃষ্ণেন্দুবাবু প্রায় ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে হেরেছেন। এমনকী, ইংরেজবাজারের ২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টি ওয়ার্ডেও নীহারবাবুর থেকে কম ভোট পেয়েছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। তাই সাধারণ মানুষের ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন