মদনমোহন মন্দিরে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
ঘড়িতে তখন সকাল ১০টা। নববর্ষের পুজো দিতে উৎসাহী ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়। মদনমোহনের আশীর্বাদ নিতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি। তার মধ্যে পুরভোটের মুখে ভক্তদের ওই ভিড়ে বাড়তি মাত্রা যোগ করল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী থেকে নেতাদের উপস্থিতি। দেবতার কাছে প্রার্থনা করতে রাজনীতির রঙ ভুলে মন্দিরের চাতালে অন্যদের মতোই তাঁদেরও দেখা গেল। ভক্ত এবং বাসিন্দাদের একাংশের অবশ্য আক্ষেপ, এত নেতার আনাগোনা হলেও মন্দির লাগোয়া রাস্তায় আধুনিক বিশ্রামঘর তৈরির ব্যাপারে কারও গরজ নেই।
আশীর্বাদ প্রার্থীদের তালিকায় বুধবার ডান-বাম শিবিরের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। এ দিন প্রচার শুরুর আগে কোচবিহারের রাজ পরিবারের কুলদেবতা মদনমোহন দেবের আশীর্বাদ নিতে প্রথম মন্দিরে ঢোকেন বিজেপির জেলা সম্পাদক তথা ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নিখিলরঞ্জন দে। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণ পর আশীর্বাদ নিতে হাজির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী গোপাল দে। খানিক বাদে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সদলবলে এসে প্রণাম সারলেন। খানিকটা সময় ধরে প্রার্থনা করলেন। দুপুর নাগাদ তৃণমূলের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী পরিতোষ কর ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী তরুণ রায়ও সটান হাজির মন্দিরে।
রোজ এ ভাবেই নিয়ম করে যুযুধান প্রার্থী, নেতারা মদনমোহনের আশীর্বাদ নিতে আসছেন। তবে নববর্ষের সকাল বলে এ দিন পরপর তাঁরা ভিড় করতে থাকেন। ভক্তদের আক্ষেপ নিয়ে যুযুধান শিবিরের নেতাপ্রার্থীরা সকলেই প্রতিশ্রুতি দিলেন। সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলেন। যা দেখে মদনমোহন মন্দিরের এক পুরোহিত বলেই দিলেন, “বাবার কাছে সবাই সমান। মন দিয়ে ডাকলে কাউকে মন্দির থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়নি।”
মন্দিরের পরিকাঠামো নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ প্রসঙ্গে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বাম আমলে কোনও কাজ হয়নি। আমরা কোচবিহারকে সাজাতে বহু কাজ করেছি। মন্দির লাগোয়া রাস্তাতেও আধুনিক আলোর ব্যবস্থা হয়েছে। অন্য সমস্ত সমস্যা মেটাতেও কাজ হবে।” ফরওয়ার্ড ব্লকের যুবনেতা গোপাল দে বলেন, “এত দিন ক্ষমতায় থেকেও তৃণমূলের পুরসভা মানুষের ওই চাহিদাকে আমল দেয়নি। ক্ষমতায় আসলে ওই এলাকায় বিশ্রামঘর তৈরির ব্যাপারে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করব।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “এ সব বলে ওঁরা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারবেন না। সুযোগ পেলে যা করার বিজেপিই করবে।”
—নিজস্ব চিত্র।