চাকুলিয়া

রাস্তা খারাপ, দুই প্রার্থীই ক্ষোভের মুখে

দু’টি বেহাল রাস্তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাকুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই। গত তিন বছর ধরে উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়া থানার পাটহাটি থেকে ডালখোলা ও বালিগুড়া থেকে ধরমপুর পর্যন্ত দু’টি রাজ্য সড়ক বেহাল হয়ে রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৬ ০২:০৮
Share:

দু’টি বেহাল রাস্তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাকুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই।

Advertisement

গত তিন বছর ধরে উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়া থানার পাটহাটি থেকে ডালখোলা ও বালিগুড়া থেকে ধরমপুর পর্যন্ত দু’টি রাজ্য সড়ক বেহাল হয়ে রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে এলাকার বাসিন্দারা চাকুলিয়ার বিদায়ী ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর) ও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তা দু’টি মেরামত করার দাবি জানালেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। চাকুলিয়া কেন্দ্রে এ বছরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভিক্টরবাবু। ঘটনাচক্রে, ভিক্টরবাবুর বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি আলেমা নুরি। গত এক সপ্তাহ ধরে তাঁরা চাকুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। আলেমা নুরিকেও বাসিন্দারা রাস্তা ঠিক না হওয়ার জন্য দোষ দিচ্ছেন। তাই দুই প্রার্থীকেই বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ সামাল দিতে ভিক্টরবাবু ও আলেমাদেবী একে অপরকে দায়ী করছেন।

ভিক্টরবাবুর দাবি, বামফ্রন্ট জেলা পরিষদের ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রায় দু’বছর আগে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ পাটহাটি থেকে ডালখোলা ও বালিগুড়া থেকে ধরমপুর পর্যন্ত বেহাল দু’টি রাস্তা মেরামতের কাজের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আরআইডিএফ প্রকল্পে প্রায় ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাব পাঠান। সেই প্রস্তাব অনুমোদনও হয়। কিন্তু প্রায় দেড় বছর আগে বামফ্রন্টের একাধিক সদস্যকে দলে টেনে তৃণমূল অনাস্থা এনে জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করার পরে রাস্তা মেরামতের প্রক্রিয়া আটকে যায়। এখন তাঁর বক্তব্য, বিধায়ক তহবিলের স্বল্প টাকায় রাস্তা দু’টি মেরামত করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘‘আমি একাধিকবার বিধানসভায় রাস্তা দু’টি মেরামতের দাবি তুলেছিলাম। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ মন্ত্রীরা কোনও গুরুত্ব দেননি।’’

Advertisement

আলেমাদেবী ও তৃণমূলের চাকুলিয়ার পর্যবেক্ষক জেলা পরিষদ সদস্য মোশারফ হোসেনের পাল্টা দাবি, তিন বছরেও রাস্তা দু’টি মেরামতের কাজ করাতে ব্যর্থ হওয়ায় নির্বাচনের মুখে ভিক্টরবাবু বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ে তাঁদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘তৃণমূল জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করার পর প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে আরআইডিএফ প্রকল্পে প্রস্তাব পাঠায়। নির্বাচন মিটে গেলেই জেলা পরিষদ সেই বরাদ্দ পাবে। তারপর কাজ শুরু হবে।’’

বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাটহাটি থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার ও বালিগুড়া থেকে ধরমপুর পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার ওই দু’টি রাস্তা গত তিন বছর ধরে পুরোপুরি বেহাল। ফলে চাকুলিয়া, তরিয়াল, সূর্যাপুর, পাগলপীর, বলঞ্চা, সুনসুনিহাট ও সাহাপুর এলাকার বাসিন্দারা বেহাল রাস্তাগুলি এড়িয়ে ২৫ ও ১২ কিলোমিটার অতিরিক্ত ঘুরপথে ডালখোলা ও গোয়ালপোখরে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন।

চাকুলিয়ার কয়েকশো বাসিন্দা প্রতিদিন ব্যবসা, ব্যক্তিগত কাজ, চিকিত্সা, পড়াশোনার জন্য গোয়ালপোখর, ডালখোলায় যাতায়াত করেন। চাকুলিয়া সদর এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ আলি ও ভক্তরাম বর্মনের দাবি, গত তিন বছর ধরে বাসিন্দারা বিধায়ক ভিক্টরবাবু ও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার সমস্যার কথা জানালেও কাজ হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন