বাহিনীর টহল বাড়াতে নির্দেশ পর্যবেক্ষকদের

কোচবিহারের সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিলেন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক দল। রবিবার কোচবিহার সার্কিট হাউসে জেলা পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন দিল্লির সিইও চন্দ্রভূষণ কুমারের নেতৃত্বাধীন পর্যবেক্ষকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০২:২০
Share:

কোচবিহারের সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিলেন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক দল। রবিবার কোচবিহার সার্কিট হাউসে জেলা পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন দিল্লির সিইও চন্দ্রভূষণ কুমারের নেতৃত্বাধীন পর্যবেক্ষকেরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে জেলার সংবেদনশীল এলাকার পাশাপাশি ভয়-ভীতির আশঙ্কার মধ্যে রয়েছেন এমন ভোটারদের ব্যাপারে বিশদে খোঁজখবর নিয়েছেন।

Advertisement

জেলায় সংবেদনশীল এলাকা হিসাবে কোন জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, ভয়-ভীতির আশঙ্কায় রয়েছেন এমন ভোটারের সংখ্যা কত, তালিকায় কারা রয়েছেন এসব ব্যাপারে খুঁটিনাটি তথ্য জানতে চান তাঁরা। ভয় মুক্ত পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সংবেদনশীল বলে চিহ্নিত এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়। এরই পাশাপাশি ভোটার তালিকা থেকে কত জন কেন বাদ পড়েছেন, তা নিয়েও বিভিন্ন তথ্য জানতে চান পর্যবেক্ষকরা।

ওই বৈঠকের পরে পর্যবেক্ষক দলের তরফে দিল্লির সিইও চন্দ্রভূষণ কুমার বলেন, “নির্বাচনের সামগ্রিক প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘুরছে। সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নির্দেশ মত পরিষেবার ব্যবস্থা রাখতে হবে।” একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের ভূমিকায় তাঁরা সন্তুষ্ট বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে বিভিন্ন তথ্য জানানো হয়েছে। সংবেদনশীল এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়াতে বলা হয়েছে।”

Advertisement

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, বৈঠকে সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের ভোটার তালিকা তৈরি থেকে বিশেষ শুদ্ধিকরণ অভিযানে ভোটার তালিকায় কাদের নাম কেন বাদ গিয়েছে, সে সব নিয়েও জানতে চান এক পর্যবেক্ষক। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ৪ হাজার নাম তালিকা থেকে কাটতে হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মৃত ভোটারদের পাশাপাশি দু’জায়গায় নাম রয়েছে এমন ভোটার ছিলেন বলে জানান হয়। জেলায় ইতিমধ্যে ৯৪ জন ভার্নারেবল ভোটার ও ৭৩টি সংবেদনশীল এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিদিন দৈনিক গড়ে ৮০ কিমি করে প্রত্যেক কোম্পানির জওয়ানেরা রুট মার্চ করছেন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বেড়ে ১৩ কোম্পানি হয়েছে। রুটমার্চের এলাকা আরও বাড়ানো হবে বলেও বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক উল্গানাথন ও পুলিশ সুপার সুনীল যাদবও বৈঠকে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের আশঙ্কা রুখতে কত জনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা হয়েছে তার পরিসংখ্যানও পর্যবেক্ষকদের কাছে প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়।

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত জুলাইয়ে ছিটমহল বিনিময় করে ভারত-বাংলাদেশ। ওই বাসিন্দাদের ১০, ৫০০ জন ভোটার হচ্ছেন বলে প্রাথমিক সমীক্ষায় তথ্য মিলেছে। সম্প্রতি ওই বাসিন্দাদের জন্য শিবির করে ভোটার তালিকায় নাম তোলার ফর্ম পূরণ, ছবি সংগ্রহ করা হয়। সোমবার খসড়া তালিকা প্রকাশ হবে। ১১ এপ্রিলের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সে সব ব্যাপারেও বিস্তারিত তথ্য পর্যবেক্ষকদের জানানো হয়। পরে মেখলিগঞ্জের জোত নিজামত এলাকায় গিয়েও ওই ব্যাপারে সরেজমিনে খোঁজখবর নিয়েছেন তাঁরা। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ওই এলাকায় ৪০টি পরিবারের ১০৬ জন বাসিন্দা ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য আবেদন করেছেন। তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছেন পর্যবেক্ষক। সকলের মোবাইল নম্বর সংগ্রহের নির্দেশও দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন