প্রতীকী ছবি।
মেয়েকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় দুষ্কৃতীদের মারে মৃত্যু হল বৃদ্ধের। মঙ্গলবার সকালে মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার লক্ষীপুর পঞ্চায়েতের বিনটোলা গ্রামের ঘটনা। রাতে আহত ওই বৃদ্ধ, আব্দুল হককে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ দিনই দুপুরে আক্রান্তের পরিবার বৈষ্ণবনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম আলাউদ্দিন শেখ। তবে এখনও অধরা রয়েছে মূল অভিযুক্ত রাহুল শেখ-সহ তিন যুবক। তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন আহতের পরিবার। ঘটনায় বাকি তিন অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েচেন পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আব্দুল কালিয়াচকের একটি বিড়ি কারখানার শ্রমিক। তাঁর পাঁচ ছেলে, মেয়ে রয়েছে। অভিযোগ, তাঁর নবম শ্রেণির স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে মাস ছয়েক ধরে উত্যক্ত করত প্রতিবেশী রাহুল শেখ-সহ তিন যুবক। স্কুল বা টিউশনে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে উত্যক্ত করা হতো, প্রেমের প্রস্তাবও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রী তা প্রত্যাখ্যান করায় তাকে আরও বিরক্ত করতে শুরু করে অভিযুক্তরা। শেষে ওই ছাত্রী সোমবার বাড়িতে পুরো ঘটনাটি জানায়। ওইদিনই বিকেলে ছাত্রীর বাবা অভিযুক্ত রাহুলের বাড়িতে গিয়ে ঘটনার অভিযোগ জানান। থানাতে অভিযোগ জানানোরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সেসময় রাহুলের বাবা আলাউদ্দিন শেখের সঙ্গে ছাত্রীর বাবার তুমুল বচসা শুরু হলে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন নির্যাতিতা ওই ছাত্রীর বাবা। সেসময় বাড়ির সামনে রাহুল দলবল নিয়ে চড়াও হয়ে তাঁর উপরে হাঁসুয়া, লোহার রড নিয়ে হামলা চালায়। শরীরের এলোপাথাড়ি কোপ মারা হয়। ঘটনায় গ্রামজুড়ে ব্যাপক হইচই পড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে গেলে অভিযুক্তেরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রাই ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। রাতে তাঁকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
মঙ্গলবার দুপুরে ওই ছাত্রীর মা বৈষ্ণবনগর থানায় আলাউদ্দিন শেখ ও তার ছেলে রাহুল শেখ-সহ চারজনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, “প্রথমে মেয়ে আমাদের কিছু জানায় নি। তবে রাস্তাঘাটে অত্যাচার দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় সহ্য করতে পারেনি। তখন আমাদের জানায়।’’ অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি চেয়েছেন ওই ছাত্রীর মা।