ভাষার আবেগ মুছে দিল কাঁটাতারের বেড়া

জাতীয় সঙ্গীতের সুরে কাঁটাতারের বাধা মুছে গিয়ে এপার-ওপার দুই বাংলার ভাষাপ্রেমীরা এক হয়ে গেলেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে। মঙ্গলবার দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের দুপারের ব্যবধান আবেগঘন মুহূর্তে ঘুচে যেতে দেখলেন প্রহরারত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৩
Share:

ভাষা দিবস উদ্‌যাপন। নিজস্ব চিত্র

জাতীয় সঙ্গীতের সুরে কাঁটাতারের বাধা মুছে গিয়ে এপার-ওপার দুই বাংলার ভাষাপ্রেমীরা এক হয়ে গেলেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে। মঙ্গলবার দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের দুপারের ব্যবধান আবেগঘন মুহূর্তে ঘুচে যেতে দেখলেন প্রহরারত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

Advertisement

হিলি সীমান্তের আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের ওপারে জিরো পয়েন্টে এ দিন সকালে আয়োজিত একুশের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, দিনাজপুরের সাংসদ মহম্মদ শিবলি সাদিক, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান মহম্মদ লিয়াকত আলি-সহ বহু গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে শুরু হয় অনুষ্ঠান। পাশেই ভারতীয় ভূখণ্ডে হিলি বিডিও অফিস প্রাঙ্গনে স্থানীয় উজ্জীবন সোসাইটির উদ্যোগে কবিতা গান নাচের মধ্যে দিয়ে মাতৃভাষা দিবসের সূচনা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক অমলকান্তি রায়, হিলির বিডিও সঞ্জয় সুব্বা, আয়োজক কমিটির প্রতিনিধি সুরজ দাস।

তার আগে বীর শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে দুই দেশের তরফে হিলি চেকপোস্টে ফুলের স্তবক দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। বাংলাদেশের গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে তুলে দেওয়া হয় ফুলের তোড়া। আইনি জটিলতায় এ বারে সীমান্তের জিরো পয়েন্টের মাটিতে যৌথমঞ্চে দু’দেশের মিলিত অনুষ্ঠান হয়নি। তাই মাঝে কাঁটাতারের বেড়াকে রেখেই দুপাশে পাশাপাশি চলে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান। সেই সময় ওপার থেকে সমবেত কণ্ঠে “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি” ভেসে আসতেই এ পারের মানুষ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে পড়েন। গানের সঙ্গে গলা মেলানোর সুরে একাত্ম হয়ে ওঠেন দুই বাংলার মানুষ। মাঝের কাঁটাতারের সীমারেখা তখন ক্রমশ আবছা হয়ে গানের সুরে সীমান্তের আকাশ বাতাস ভরে গিয়েছে। দূরত্ব মুছে দিয়ে এ ভাবেও যে ভাষা দিবসে মিলিত হওয়া যায় সেটাই দেখালেন এপার-ওপার দু বাংলার মানুষ।

Advertisement

উত্তরবঙ্গের অন্য নানা জায়গাতেও এ দিন ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান হয়। হলদিবাড়িতে এ দিন সকালে ভাষা শহিদ বেদীর স্মারক নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল শহর পরিক্রমা করে। কোচবিহারে কোথাও বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। কোথাও গান, নাচ, আলোচনা সভা। মঙ্গলবার কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় সহ নানা জায়গায় ভাষা দিবস পালন করা হয়। এদন সকাল ১০টা নাগাদ দিনহাটা ফুলদিঘির পাড়ে ভাষা দিবসের আয়োজন করেন চারুকলা সোসাইটি। জেলা তথ্য সংস্কৃতি দফতর ও রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমির উদ্যোগেও মাতৃভাষা দিবস পালন হয়। শিলিগুড়িতে হিলকার্ট রোডের ধারে বাংলাদেশের ভাষা শহিদ বেদীর অনুকরণে মঞ্চ বানিয়ে অনুষ্ঠান করে তৃণমূল। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন শিলিগুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত ঘোষ। নেপালি ভাষাতে নিজের লেখা কবিতা পাঠ করেন শিলিগুড়ি কলেজের নেপালি বিভাগের প্রধান তেজিয়ান বরেলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন