প্রশ্নের মুখোমুখি পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।
• একে তো মালদহে ট্র্যাফিক মানেই বিভীষিকা। মালদহে গৌড় বা আদিনাতে সারা দেশ থেকে পর্যটক আসেন। অথচ সেখানে পর্যটকদের নিরাপত্তার ন্যূনতম নিরাপত্তা নেই। দিনে দুপুরে চুরি ছিনতাই চলছে। স্থানীয় প্রশাসন সবই জানে। আপনারা জানেন কী?
মহম্মদ আসিরুদ্দিন, মালদহের বাসিন্দা
মন্ত্রী: এতো ভয়ঙ্কর ঘটনা। আমি নিজে মালদহের পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলব। শুধু পর্যটক কেন স্থানীয় বাসিন্দাদেরও যাতে অনিরাপত্তায় ভুগতে না হয় তার পদক্ষেপ হবে।
• পশ্চিমবঙ্গে নানা সম্প্রদায়ের প্রাচীন ধর্মস্থান রয়েছে। সেগুলিকে সামনে রেখে কেন পর্যটনের পরিকাঠামো তৈরি হবে না?
বাপন দাস, কলেজ শিক্ষক
মন্ত্রী: ভাবা হয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে। অনেকদিন আগেই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও আমাকে এ বিষয়ে বলেছেন। বেলুড় থেকে ফুরফুরা শরিফ সব কিছুকে একসূত্রে গেঁথে প্যাকেজ তৈরি হচ্ছে। উত্তরবঙ্গেও কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির, জল্পেশ থেকে শুরু করে হলদিবাড়ির হুজুরসাহেবের মাঠ, শিলিগুড়ির মাজার সংস্কার হয়েছে। এ ছাড়াও অনেক মন্দির, মাজার-মসজিদ রয়েছে যেখানে ভিন রাজ্য তো বটেই বিদেশিরাও দর্শন করতে গবেষণা করতে আসেন। সে সব নিয়ে পরিকল্পনা হয়েছে। মহাবোধি সার্কিট তৈরি হচ্ছে। এর কাজ শেষ হলে মায়নমার, চিন থেকে আরো বেশি করে পর্যটকদের নিয়ে আসা যাবে।
• জুবিলি পার্ক লাগোয়া বাঁধের সৌন্দর্যায়নের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। লাটাগুড়ি-চাপরামারির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকরা যান। কিন্তু গিয়ে দেখেন, প্লাস্টিকের-বোতল ছড়িয়ে রয়েছে নদীর পাড় থেকে জঙ্গলের ঘাসের পথে। পরিবেশ তো ধ্বংসের মুখে। তা ছাড়া নানা ধরণের হোম স্টে তে অসামাজিক কাজ হয়েই চলছে বলে জানা যায়। কিছুই কী করর নেই?
দিলীপ হোড়, শিক্ষক
মন্ত্রী: কঠোরভাবে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করতে হবে। আমি দিঘাতেও দেখেছি সমুদ্রে প্রচুর প্লাসিটিক ভেসে আসছে। যাই হোক, জলপাইগুড়ির জেলাশাসক এবং প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছি, আবার করব। লাটাগুড়ি চাপরামারি্ সহ জেলার কয়েকটি জায়গাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এই জোনগুলিতে দায়িত্বশীল পর্যটন গড়ে তুলতে হবে। নজরদারি বাড়াতে হবে। তবে শুধু প্রশাসনিক পদক্ষেপে এটা সম্ভব নয়, সকলের সহযোগিতা চাই। সব হোম স্টে রেজিস্ট্রেশন করার কাজ শুরু হয়েছে। তাহলেই অনেকটা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। জলপাইগুড়ির জুবলি পার্কে কিন্তু কটেজও তৈরি হচ্ছে।
• জলপাইগুড়ির প্রসন্ন দেব মহিলা (পিডি) কলেজে ট্যুরিজম এন্ড ট্র্যাভেল ম্যানেজমেন্টের একটি পাঠক্রম রয়েছে। কিন্তু সেখানে ক্যাম্পাসিঙের ব্যবস্থা না থাকায় ছাত্রীরা বিপাকে পড়ছেন। পাঠক্রমের প্রতি অনেকেউ উৎসাহও হারাচ্ছেন।
কোয়েলা গঙ্গোপাধ্যায়, কলেজ শিক্ষিকা
মন্ত্রী: এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে। বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আমার বা আমার দফতরের থেকে যদি কোনও সহয়োগিতা চান, নিশ্চই করব।
• গত পাঁচবছরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী হিসেবে যোগাযোগকে আপনি অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন, এ বারে পর্যটনের কোন ক্ষেত্রগুলিকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছেন? সঙ্গে একটা অনুরোধ ডুয়ার্স-দার্জিলিঙের ব্র্যান্ডিং তো হয়েইছে। এবার যদি অন্যভাবে উত্তরবঙ্গের ব্র্যান্ডিং করতে পারি তাহলে কিন্তু পর্যটকের সংখ্যা আরো বাড়বে।
সম্রাট সান্যাল, কার্যকরী সভাপতি, এতোয়া
মন্ত্রী: আলিপুরদুয়ারের চিলাপাতাতে বিকল্প পর্যটন হচ্ছে। দার্জিলিঙের পরিকাঠামোকে আর বাড়ানোর খুব একটা অবকাশ নেই। আমরা নয়া দার্জিলিঙের পরিকল্পনা করছি। কালিম্পংকে ফোকাস করে কাজ করব। লাভা-লোলেগাঁও, রিশভ, নেওড়াভ্যালি, মংপু এই সব নিয়ে নতুন প্যাকেজ তৈরি হচ্ছে। বিশ্ববাংলা পর্যটনকেন্দ্র হবে। কুলিক নিয়েও পরিকল্পনা রয়েছে।
(শেষ)