কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার
জাল ওবিসি শংসাপত্র ব্যবহারের অভিযোগে কংগ্রেসের বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করল পুলিশ। শঙ্করবাবু ওই শংসাপত্র দেখিয়েই গত বিধানসভা নির্বাচনে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির সংরক্ষিত আসনে তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে ভোটে জেতেন।
শিলিগুড়ি থানায় গত ৪ অগস্ট দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস (সমতল) সভাপতি শঙ্করবাবুর নামে অভিযোগ করেন দলের দার্জিলিং জেলার এক সাধারণ সম্পাদক গৌতম কীর্তনিয়া। আদালত সূত্রের খবর, ৫ অগস্ট পুলিশ তা খতিয়ে দেখে শঙ্করবাবু ও তাঁর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করে। পুলিশ সূত্রের খবর, নথিপত্র দেখে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে পুলিশকে তদন্ত এগোনোর নির্দেশে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। শিলিগুড়ির সিপি মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। আর কিছু বলার নেই।’’
কংগ্রেসের অভিযোগ, নানা চাপ সত্ত্বেও শঙ্করবাবু শাসক দলে যোগ না দেওয়াতেই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে শঙ্করবাবুকেও দেখা যাবে বলে রটনাও ছড়াতে সে দিনই তিনি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বলেন, তৃণমূলে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। কংগ্রেসের দাবি, শঙ্করবাবুকে তাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবেই বিপাকে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে অক্টোবরে শিলিগুড়িতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা। তার মুখে শঙ্করবাবুকে কোণঠাসা করতে পুলিশকে কাজে লাগানো হচ্ছে বলেও কংগ্রেসের নেতাদের অভিযোগ। তবে তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারব না।’’
শঙ্করবাবুর দাবি, যিনি অভিযোগ করেছেন, তিনি ভোটের সময়ে তাঁর হয়েই প্রচার করেছেন। শঙ্করবাবুর কথায়, ‘‘আমার ভাইয়ের শংসাপত্র প্রশাসন বাতিল করেছে। আমরা সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে আপিল করেছি। স্থগিতাদেশও রয়েছে। সে সময় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েই মামলা রুজু করে দেওয়া হল?’’ তিনি জানান, গোটা বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টে ও বিধানসভার স্পিকারকে জানাবেন। তবে এ দিন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমন ঘটনার কথা জানা নেই।’’
অভিযোগকারীর দাবি, গত বিধানসভা ভোটে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য রাতারাতি জাল ওবিসি শংসাপত্র তৈরি করিয়েছিলেন শঙ্করবাবু। অভিযোগে বলা হয়েছে, সে জন্য শঙ্করবাবু প্রথমে তাঁর খুড়তুতো ভাই মলয় মালাকার ও নিজের ভাই সম্রাট মালাকারের ওবিসি শংসাপত্র তৈরি করান। তার ভিত্তিতে শঙ্করবাবুও ওবিসি শংসাপত্র পান। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে তদন্তের পরে গত এপ্রিলে শঙ্করবাবুর ভাইদের ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে শিলিগুড়ি মহকুমা প্রশাসন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শঙ্করবাবু ও তাঁর দুই ভাই যে জাল নথিপত্র দিয়ে শংসাপত্র পেয়েছেন, তার বেশ কিছু নথি পুলিশকে জানিয়েছি। এখানে রাজনীতির কিছু নেই।’’