ছবি তুলতেই চেম্বারে গুদাম

মঙ্গলবার সকালে এক সাংবাদিক ওই ক্লিনিক ও পোস্টারের ছবি তোলা মাত্র এক বেলার মধ্যে সব ভোঁ ভাঁ। ক্লিনিকের সাইনবোর্ড ও পোস্টার তুলে নিয়ে গা ঢাকা দিলেন স্বঘোষিত এমবিবিএস ডাক্তার এ রহিম। এ দিন বিকেল ছ’টা নাগাদ দেখা যায় ভাড়া নেওয়া ওই চেম্বারের দরজায় নতুন রঙের প্রলেপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ১৩:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

চেম্বারের সামনে ঝাঁ চকচকে পোস্টার। তাতে লেখা এ রহিম, এমবিবিএস, এমডি। অর্শ্বরোগ বিশেষজ্ঞ ও জেনারেল ফিজিশিয়ান। রোগমুক্তি ডায়গনস্টিক কালেকশন সেন্টারের নামে ওই পোস্টারকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে সরকারি হাসপাতালের কিছু চিকিৎসকের নামও তাতে লেখা। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার ফুলবাড়ি এলাকায় ‘আসিফ হেল্‌থ পয়েন্ট’ নামে ক্লিনিক খুলে গত ৭ মাস ধরে রোগী দেখছিলেন আব্দুল রহিম ওরফে এ রহিম নামে ওই ডাক্তার।

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে এক সাংবাদিক ওই ক্লিনিক ও পোস্টারের ছবি তোলা মাত্র এক বেলার মধ্যে সব ভোঁ ভাঁ। ক্লিনিকের সাইনবোর্ড ও পোস্টার তুলে নিয়ে গা ঢাকা দিলেন স্বঘোষিত এমবিবিএস ডাক্তার এ রহিম। এ দিন বিকেল ছ’টা নাগাদ দেখা যায় ভাড়া নেওয়া ওই চেম্বারের দরজায় নতুন রঙের প্রলেপ। ক্লিনিক তখন গুদামঘরে পরিণত হয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ভুয়ো ডাক্তার বলে অভিযোগ করে বাসিন্দারা ওই ব্যক্তির শাস্তি দাবি করেন। পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে নজরদারির অভাব ও গাফিলতির অভিযোগও উঠেছে। বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, রাজ্য সরকার ভুয়ো ডাক্তার ধরতে তৎপর। সেখানে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা ঘুমোচ্ছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। থানায় এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দেখা মিলল অভিযুক্ত ভুয়ো ডাক্তার আব্দুল ওরফে এ রহিমের। তিনি দাবি করেন, এমবিবিএস পাশ করেছেন। কিন্তু কোন কলেজ থেকে? কত সালে? জানাতে পারেননি। তবে বারবার জানান, তিনি ভুয়ো ডাক্তার নন। তবে কেন ছবি তুলতেই পাততাড়ি গুটিয়ে নিলেন। উত্তর দেননি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ফুলবাড়ি এলাকা থেকে সামান্য দূরে তপনের মালঞ্চা এলাকার এক যুবতীকে বিয়ে করে বসবাস করেন আব্দুল রহিম। আদতে মালদহের সুজাপুরের বাসিন্দা আব্দুল রহিম কয়েক বছর আগে তপনের রামপুর এলাকায় প্রথম বিয়ে করে সেখানে চেম্বার খুলে ডাক্তারি ব্যবসা শুরু করেন বলে অভিযোগ। এরপর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দ্বিতীয় বিয়ে করে গঙ্গারামপুরের ফুলবাড়িতে চেম্বার ও ক্লিনিক খুলে বসেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত বসাক অভিযোগ করেন, ‘‘৭ থেকে ৮ হাজার টাকা নিয়ে ওই দোকান ঘরের চেম্বারে অর্শ্বের অস্ত্রোপচার করতেন ওই ডাক্তারবাবু। ঠাঁটবাট ও চিকিৎসক তালিকায় সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের নাম দেখে আমাদের সন্দেহ হয়নি।’’

গঙ্গারামপুর হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসকের নাম তালিকায় লেখা থাকলেও তারা বিষয়টি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন