এমন পাঁচটি কাচের জারেই উদ্ধার হয় বিষ। — ফাইল চিত্র
কথায় আছে কেঁচো খুঁড়তে কেউটে। এ যেন কেউটে খুঁড়তে গিয়ে আরও মারাত্মক কোনও রহস্যের খোঁজ! কেউটে, থুড়ি সাপের বিষ উদ্ধার কাণ্ডের তদন্তে এখন যেন তেমন রহস্যই উঁকি মারছে।
কারণ, সাপের বিষ পাচারে ধৃতদের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর সংখ্যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশিট, শংসাপত্র, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড ও বিভিন্ন আবেদনপত্র উদ্ধার করেছে বন দফতর৷ যা থেকে বন দফতরের কর্তাদের সন্দেহ সাপের বিষ পাচার চক্রের সঙ্গেই এই ধৃতেরা চাকরির নামে প্রতারণা চক্রের সঙ্গেও যুক্ত৷ এ দিনই বন দফতরের তরফে উদ্ধার হওয়া সমস্ত নথি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে ফুলবাড়ি এলাকা থেকে বন দফতরের বৈকুণ্ঠপুর বিভাগের বেলাকোবা রে়ঞ্জ সাপের বিষ-সহ চারজনকে গ্রেফতার করে৷ ধৃতদের মধ্যে তিনজন দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা ও একজন মালদহের বাসিন্দা৷ ধৃতদের কাছে পাওয়া একটি রিভলবার, চার রাউন্ড কার্তুজ সহ একটি গাড়িও আটক করে বন দফতর৷ সেই গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েই প্রচুর সংখ্যায় মার্কশিট, বায়োডেটা ও চাকরির আবেদনপত্র পান দফতরের কর্তারা৷ উদ্ধার হওয়া এই সব নথিপত্রের বেশিরভাগই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ঠিকানার৷ বন দফতরের বৈকুণ্ঠপুর এলাকার ডিএফও পি আর প্রধান বলেন, ‘‘ধৃতদের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় এক বান্ডিল নথি উদ্ধার হয়েছে৷ আমরা সেগুলি সবই পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছি।’’
বন দফতর সূত্রের খবর, এই সব নথির ওপর ভিত্তি করেই ধৃতদের আদালতে তোলার পরবর্তী দিনে নিজেদের হেফাজতে চাইবেন তাঁরা৷ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, আদালত যদি ধৃতদের বন দফতরের হেফাজতের নির্দেশ দেয়, এবং তাদের জেরা করে যদি তেমন কোন তথ্য উঠে আসে তবে অবশ্যই তার ভিত্তিতে তাঁরা ধৃতদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করবেন৷ বন দফতর থেকে জমা দেওয়া নথিগুলিও তাঁরা খতিয়ে দেখছেন বলে জানান ওই পুলিশ কর্তা।
বস্তুত, বিষ-পাচার কাণ্ড ঘিরে রীতিমতো আলোড়ন পড়েছে। প্রায় ২০০ কোটি টাকার সাপের বিষ উদ্ধার হওয়া পরে বন দফতরের কর্তাদের সন্দেহ দীর্ঘদিন ধরেই উত্তরবঙ্গের এই এলাকাকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করে বিষ পাচার করে আসছিল দুষ্কৃতীরা। এ বার ধৃতদের কাছ থেকে এই সব নথি মেলায় এই কাণ্ডের পিছনে সংগঠিত চক্র থাকার সম্ভাবনাই আরও জোরালো হল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।