cold storage

কোথাও ফড়ের ‘দাপট’, কোথাও ‘আগাম’ বন্ড

কৃষি বিপণন দফতর থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি ভাবে সাড়ে ছ’টাকা কেজি দরে আলু কেনা হবে। সে ক্ষেত্রে কৃষকদের লোকসানের সম্ভাবনা কম হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার, দিনহাটা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ ০৭:১৫
Share:

হিমঘরে আলু রাখা নিয়ে উঠছে কালোবাজারির অভিযোগ। — ফাইল চিত্র।

উৎপাদনের তুলনায় হিমঘরের সংখ্যা হাতেগোনা। তার উপরে ফড়ের দাপট। এই অবস্থায় কোচবিহারে হিমঘরে আলু রাখা নিয়ে উঠছে কালোবাজারির অভিযোগ।কৃষকদের একাংশের অভিযোগ, কোথাও আলুর বন্ড আগাম দেওয়া হচ্ছে, কোথাও আবার চাষিদের এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তা নিয়ে বিক্ষোভ, পথ অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে। যদিও প্রশাসনের তরফে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি মেটানোর চেষ্টা চলছে। কৃষি বিপণন দফতর থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি ভাবে সাড়ে ছ’টাকা কেজি দরে আলু কেনা হবে। সে ক্ষেত্রে কৃষকদের লোকসানের সম্ভাবনা কম হবে।

Advertisement

কৃষি বিপণন দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক শেখ সাবির আলি বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে সাড়ে ছ’টাকা কেজি দরে কৃষকদের থেকে আলু কেনা হবে। সঙ্গে হিমঘরে আলু রাখাও শুরু হয়েছে। তাতে খুব সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’ মহকুমাশাসক (কোচবিহার সদর) রাকিবুর রহমান বলেন, ‘‘হিমঘরে আলু রাখা নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই কৃষকদের আলুর বন্ড দেবে হিমঘরগুলি। তার পরেও অসুবিধা হলে দেখা হবে।’’

কৃষি দফতর সূত্রে খবর, কোচবিহার জেলায় ৩৬ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি জমিতে আলু চাষ হয়। এ বার অনুকূল আবহাওয়ায় উৎপাদন ভাল হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, জেলায় ১১ লক্ষ টন আলুর ফলন হতে পারে। এ দিকে, হিমঘর রয়েছে ১৯টি, যেখানে তিন লক্ষ টনের মতো আলু মজুত করা যেতে পারে। স্বাভাবিক ভাবেই আলুর বন্ড নিয়ে কালোবাজারির আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

কৃষকদের অনেকেই অভিযোগ করেন, জেলার বহু জায়গায় জ্যোতি আলুর দাম কেজি প্ৰতি তিন থেকে চার টাকায় নেমে এসেছে। তা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। চলছে ফড়েদের দাপটও। কম দামে আলু কিনে মজুত করছে তারা। হিমঘরের বড় অংশের বন্ড তাদের হাতে চলে যাওয়ার অভিযোগ করেন কৃষকেরা। হিমঘর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, এমনহওয়ার সুযোগ নেই। প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট কাগজ দেখেই বন্ড বিলি হচ্ছে।পশ্চিমবঙ্গ হিমঘর অ্যাসোসিয়েশনের উত্তরবঙ্গ জ়োনের সভাপতি মানিক বৈদ বলেন, ‘‘প্রশাসন যে ভাবে আলুর বন্ড বিলির নির্দেশ দিয়েছে, সে ভাবে কাজ হচ্ছে। তার পরেও যে অভিযোগ উঠেছে, তা প্রসাশনকেজানানো হচ্ছে।’’

মঙ্গলবার দিনহাটায় আলুর বন্ড না পেয়ে বলরামপুর রোড হিমঘরে সকাল থেকে কৃষকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নাজিরহাটের এক কৃষক দুলালচন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘দু’বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছিলেন ৭ তারিখ থেকে আলুর বন্ড দেওয়া হবে। সেই মতো এসে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বন্ড মেলেনি।’’ আর এক কৃষক আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী এসে দেখি, আগেই তাঁরা টোকেন দিয়ে দিয়েছেন।’’

দিনহাটার একটি হিমঘরের সুপারভাইজ়ার সৌরিত সাহা বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, বিভিন্ন কোটা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। কৃষকেরাও যাতে ঘরে আলু রাখতে পারেন, তা প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তার পরেও কেউ বিক্ষোভ দেখালে, তা অবশ্যই প্রশাসন দেখবে।’’ এর আগে, কোচবিহার ২ নম্বরবলকেট সোনারি ও পুন্ডিবাড়ি ব্লকেও বিক্ষোভ হয়। আলু ব্যবসায়ী মালেকুল রহমান বলেন, ‘‘এ বার হিমঘরে আলু রাখতে ব্যবসায়ীদের কোটা দেওয়া হয়নি। তাই আমরা সমস্যায় আছি। আলু সংরক্ষণের জায়গাবাড়ানো উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন