জ্বরে ভুগে ডেঙ্গির ভয়

তিনি জানান, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মহিলা কর্মীদের দিয়ে মাসে দু’বার বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে জ্বরের রোগী রয়েছে কি না, সমীক্ষা করানো হচ্ছে। ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচারও চলছে।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৩
Share:

শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় জ্বরের প্রকোপ চলছেই। জ্বর নিয়ে প্রতিদিনই প্রচুর রোগী আসছেন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। তাঁদের একাংশের ভাইরাল ফিভার হলেও কয়েক জনের রক্তে এনএসওয়ান ডেঙ্গির জীবাণুও মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। গত কয়েক বছরে শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। গত বছর ডেঙ্গিতে মৃত্যুও হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ে আগে থেকে সতর্ক হতে মঙ্গলবারই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নির্দেশ দিয়েছেন উপসর্গ দেখে মনে করলে ডেঙ্গি নির্ণায়ক ম্যাকএলাইজা পরীক্ষা করাতে। নার্সিংহোমগুলিতেও জ্বর নিয়ে রোগী আসছে। তাঁদের একাংশের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণুও মিলছে।

Advertisement

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘জ্বরের রোগী আসছে। বেশির ভাগই ভাইরাল ফিভার। প্রয়োজন মতো তাদের ডেঙ্গি নির্ণায়ক রক্ত পরীক্ষাও করাতে বলা হয়েছে। তবে এখনও ডেঙ্গির রোগী দুই একটি ক্ষেত্রেই মিলেছে।’’

তিনি জানান, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মহিলা কর্মীদের দিয়ে মাসে দু’বার বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে জ্বরের রোগী রয়েছে কি না, সমীক্ষা করানো হচ্ছে। ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচারও চলছে। শহরে জঞ্জাল নিয়মিত সাফাই করা, কোথাও জল যাতে জমে না থাকে, স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে পুর কর্তৃপক্ষকে তা দেখতে বলা হয়েছে।

Advertisement

হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের সন্দেহ জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীও কিছু রয়েছেন। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে এদিন জ্বর নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন চয়নপাড়ার বাসিন্দা নন্দা দাস, বিবেকানন্দনগরের মাম্পি সাহা, নিউ জলপাইগুড়ি এলাকার কণিকা প্রসাদরা। নন্দাদেবী বলেন, ‘‘পাঁচ দিন ধরেই জ্বরে ভুগছি। চিকিৎসক আজ ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা করাতে বলেছেন।’’

মাম্পিদেবী জানান, সপ্তাহখানেক ধরে তিনি জ্বরে ভুগছেন, তাঁর মেয়ে অনিশাও দুই তিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। ঘোঘোমালির বাসিন্দা সুশীল রায় জ্বরে আক্রান্ত।

শহরের নার্সিংহোমগুলিতেও জ্বর নিয়ে চিকিৎসা করাতে অনেকেই যাচ্ছেন। খালপাড়া, সেবক রোড়ের কয়েকটি নার্সিংহোমেও জ্বরের রোগী রয়েছে। ডেঙ্গির জীবাণুও কয়েকজনের শরীরে মিলেছে।

সেই রিপোর্ট স্বাস্থ্য দফতরকে নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি শহরের নার্সিংহোমগুলি থেকে জ্বরে আক্রান্তদের যে রক্তে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে বেশ কিছু ক্ষেত্রেই ডেঙ্গির জীবাণু মিলছে।

শহরের একাংশের জঞ্জাল নিয়মিত সাফাই হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন অংশে নির্মাণ কাজের জায়গাগুলিতেও জল জমে থাকছে। শিলিগুড়ি পুরসভার সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত জানান, নির্মাণ কাজের জায়গাগুলিতে যাতে জল জমে না থাকে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। এই সময় সাফাই পরিষেবার উপরও জোর দেওয়া হচ্ছে। সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন উত্তরের মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন