সোমবার রাতের কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ময়নাগুড়ির নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল চেহারা দেখলেন বাসিন্দারা। জলকাদায় একসা হয়ে যায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ পুরাতন বাজার। মঙ্গলবার গোড়ালি ডোবা কাদার জন্য বাজারে দোকান খুলে বসতে পারলেন না বিক্রেতাদের একাংশই। ক্ষুব্ধ ক্রেতা মহলে প্রশ্ন উঠেছে, প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রিত বাজারে কেনাকাটা করতে ভিড় করেন জেনেও কেন বাজারের নিকাশি ও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত করা হচ্ছে না? স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না?
ময়নাগুড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বজরংলাল হিরাউত বলেন, “দেড় দশক থেকে ওই পরিস্থিতি চলছে। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তাদের কয়েক দফায় জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। বাজারের বেহাল দশা নিয়ে কেউ ভাবছে না।” একই অভিযোগ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ময়নাগুড়ি নাগরিক চেতনার। সংগঠনের সভাপতি পীযূষকান্তি কর্মকার বলেন, “সামান্য বৃষ্টিতে বাজারে যাওয়া যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন থেকে উন্নত নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে কোনও লাভ হচ্ছে না। জানি না এ ভাবে কতদিন চলতে হবে।” যদিও উদাসীনতার অভিযোগ অস্বীকার করেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সিপিএম সভাধিপতি নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, “ময়নাগুড়ি বাজারের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। টেন্ডর প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি কিছু দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।”
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরাতন বাজারে সাড়ে সাতশো স্থায়ী দোকান রয়েছে। অস্থায়ী দোকানের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। বাজারের একদিকে আছে ফল, কাপড়, খাবার, জুতা, কসমেটিক্স, লোহালক্কড় সহ বিভিন্ন দোকান। অন্য দিকে জরদা নদী পাড়ে কয়েকশো সবজি ও মাছ বিক্রেতা বসেন। সেখানে প্রতিদিন সকালে কয়েক হাজার মানুষ কেনাকাতার জন্য ভিড় করেন। সোমবার রাতের কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে গোটা সবজি ও মাছ বাজার জলে ভাসতে শুরু করে। নর্দমার পচা জলকাদায় ভরে যায় গোটা চত্বর। মঙ্গলবার বাজারে দাঁড়ানোর জায়গা না পেয়ে বিক্রেতারা তো বটেই খদ্দেররা বিপাকে পরে যান। শুধু সবজি অথবা মাছ বাজার নয়। জলকাদার জন্য কাপড় ও জুতোর বাজারে চৈত্রের সেল এদিন মার খেয়েছে।
ময়নাগুড়ির তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান কমল দাস বলেন, “বুধবার থেকে বাজারের নিকাশি নালা সাফাইয়ের কাজ চলবে।”