স্কুল চত্বর থেকে মিলল আগ্নেয়াস্ত্র

মালদহের কালিয়াচকে এ বার স্কুল চত্বর থেকেই মিলল আগ্নেয়াস্ত্র। আর সেই আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষকে জমা দিল দুই পড়ুয়া। শুক্রবার দুপুরে গোলাপগঞ্জের আকন্দবেড়িয়া এস.সি হাইস্কুলে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় হইচই পড়ে যায় স্কুল জুড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ০২:১০
Share:

মালদহের কালিয়াচকে এ বার স্কুল চত্বর থেকেই মিলল আগ্নেয়াস্ত্র। আর সেই আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষকে জমা দিল দুই পড়ুয়া।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে গোলাপগঞ্জের আকন্দবেড়িয়া এস.সি হাইস্কুলে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় হইচই পড়ে যায় স্কুল জুড়ে। বন্ধ হয়ে যায় স্কুলের পঠন পাঠন। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অভিভাবকরাও। স্কুলের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র কি ভাবে এল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ। তখনই আগ্নেয়াস্ত্রটি পুলিশের হাতে তুলে দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পাইপগানটি কে বা কারা রেখেছে তা খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে স্কুল কর্তৃপক্ষ, ছাত্র এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা হবে। ঘটনাটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

কালিয়াচকের গোলাপগঞ্জ ফাঁড়ির সাহাবাজপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ভোলাইচক গ্রামে রয়েছে আকন্দবেড়িয়া এস.সি হাইস্কুল। এই স্কুলে প্রায় দেড় হাজার পড়ুয়া রয়েছে। স্কুলের সীমানা প্রাচীরের ধারে ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত শৌচাগার। সেই শৌচাগারের পাশে জলাধার নির্মাণের কাজ চলছিল। যদিও জলাধার নির্মাণের কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। শৌচাগারের পাশেই জমা করে রাখা হয়েছে নির্মাণ সামগ্রী।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃতীয় পিরিয়ডের পর শৌচাগারে গিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্র। সেই সময় শৌচাগারের ছিল নবম শ্রেণির আরও এক স্কুল ছাত্র। তারাই ওই আগ্নেয়াস্ত্রটি দেখতে পেয়ে খেলনা ভেবে হাতে তুলে নেয়। পরে ভারী দেখে সন্দেহ হওয়ায় সেটি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয় ওই দুই ছাত্র।

বিষয়টি জানাজানি হতেই স্কুল জুড়ে হইচই পড়ে যায়। বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ থেকে বেড়িয়ে আসে পড়ুয়ারা। স্কুলের মধ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এমনকী, এও রটে যায় যে এক স্কুল ছাত্রের ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। গ্রামবাসীরাও ঘটনাটি জানতে পেরে জড়ো হয় স্কুলে। ছুটে আসে ওই দুই ছাত্রের পরিবারের লোকজনও। অভিভাবকেরা দাবি তোলেন, কিভাবে স্কুলে আগ্নেয়াস্ত্র এলো, তা পুলিশকে খতিয়ে দেখতে হবে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মণ ঘোষ বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক। আমাদের স্কুলের দুই ছাত্র ওই আগ্নেয়াস্ত্রটি দেখতে পায়। প্রথমে খেলনা ভেবেছিল। হাতে নিয়ে বুঝতে পেরে আতঙ্কে তারা আমাদের কাছে জমা দিয়েছে। আমরা পুলিশের হাতে তা তুলে দিয়েছি।’’

স্কুল জুড়ে রয়েছে সীমানা প্রাচীর। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, একজন নিরাপত্তা রক্ষীও রয়েছেন স্কুলে। তবে সীমানা প্রাচীরটি খুব বেশি উচুঁ না হওয়ায় অনায়াসে তা টপকানো যায়। স্কুলের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, মাস খানেক আগে ওই শৌচাগার সংলগ্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছিল মদের ভাঙা বোতল। তা নিয়ে
হইচই হয়েছিল।

স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমান, বাইরে থেকে কেউ বা কারা ওই অস্ত্রটি ফেলে থাকতে পারে। স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি সুজিত মণ্ডল বলেন, ‘‘এর আগেও মদের ভাঙা বোতল উদ্ধার হয়েছিল। এবার উদ্ধার হল আগ্নেয়াস্ত্র। স্কুলের মধ্যে অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে পড়ুয়ারা। এ দিনই আমরা তড়িঘড়ি বৈঠক করেছি। স্কুলের সীমানা প্রাচীর আরও বাড়ানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’

স্কুলের নিরাপত্তা রক্ষী খগেন মণ্ডল বলেন, ‘‘রাতে আমাকে পুরো স্কুল টহল দিতে হয়। কি ভাবে অস্ত্রটি ওখানে এলো তা আমি বলতে
পারব না।’’

পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলের নিরাপত্তা রক্ষী থেকে শুরু করে বেশ কিছু অভিভাবককে জেরা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন