school dropouts

HarishChandrapur: মাঠে ধান কাটছে ফার্স্ট বয়

হরিশ্চন্দ্রপুরের চণ্ডীপুর হাই স্কুল। স্কুল খোলার পর এক মাস পেরিয়েছে।

Advertisement

বাপি মজুমদার 

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৯:২৪
Share:

ধানের বোঝা নিয়ে মনোতোষ। নিজস্ব চিত্র।

সাইকেল জুড়ে ধানের বোঝা। ধানের ভারে নুইয়ে পড়েছে ছোট্ট শরীরটা। পিছনে আরও ধানের বোঝা মাথায় নিয়ে বাবা, ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া বোন। ‘কী রে, স্কুলে যাচ্ছিস না কেন?’ প্রশ্ন শুনেই শিক্ষকদের দিকে চেয়ে লাজুক স্বরে ফার্স্ট বয়ের উত্তর, মাঠের ধান এখনও তোলা হয়নি। ধান কাটা ও ঝাড়াইয়ের কাজ শেষ হলেই স্কুলে যাব। ফার্স্ট বয়ের মুখে স্কুলে ফেরার কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন শিক্ষকরা। এ ঘটনা মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বোড়ল এলাকার।

Advertisement

হরিশ্চন্দ্রপুরের চণ্ডীপুর হাই স্কুল। স্কুল খোলার পর এক মাস পেরিয়েছে। কিন্তু হাজিরার হার অর্ধেকেরও কম। কেন সিংহভাগ পড়ুয়া গরহাজির, তার কারণ খুঁজতে এলাকায় ঘুরছেন শিক্ষকেরা। গরহাজিরার তালিকায় লাস্ট বয়ের মতো রয়েছে নবম শ্রেণির ফার্স্ট বয় মনতোষ মণ্ডলও। মনতোষ অনুপস্থিত দেখে বোড়ল গ্রামে হাজির হয়েছিলেন শিক্ষকেরা। তালাবন্ধ বাড়ি দেখে প্রতিবেশীদের কাছে শোনেন যে, মনতোষকে মাঠে পাওয়া যাবে। সে দিকে যেতেই চোখে পড়ে, মেঠো পথ ধরে সাইকেল বোঝাই ধান বয়ে আনছে সে।

মনতোষরা দুই ভাইবোন। ছোট বোন অর্পিতার ক্লাস শুরু হয়নি। বাবা সুনির্মল পোশাক ফেরি করে সংসার চালান। নিজের জমিজায়গা নেই। তাই আমন ধানের মরসুমে সকলে মিলে অন্যের ধান কাটেন। বিনিময়ে পাঁচ ভাগের যে এক ভাগ পান, তা দিয়ে কয়েক মাস নিশ্চিন্তে থাকা যায়। আমনের মরসুমে গ্রামীণ এলাকার অধিকাংশ অভাবি পরিবারের অবস্থাটা মনতোষদের মতোই।

Advertisement

সুনির্মল বলেন, ‘‘কী করব। ফসল না কাটলে সংসার চলে না। কিন্তু স্কুলে যাওয়া কেন জরুরি তা শিক্ষকেরা বোঝালেন। এ বার থেকে নিয়মিত স্কুলে পাঠাব।’’

প্রধান শিক্ষক জ়ুলফিকার আলি বলেন, ‘‘আপাতত দশম ও দ্বাদশের টেস্ট চলছে। যত দিন না শনিবার ক্লাস চালু হচ্ছে, তত দিন শনিবার করে শিক্ষকেরা এলাকায় ঘুরবেন। ভাল পড়ুয়ারা গরহাজির হলে যে কোনও দিন আমরা তাদের বাড়িতে হাজির হব।

চাঁচলের মহকুমাশাসক কল্লোল রায় বলেন, ‘‘অনেক স্কুলই এলাকায় ঘুরে গরহাজির পড়ুয়াদের ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন