পর্যটক টানতে এ বার পাহাড়ি নদীতে মাছ ধরার সুযোগ করে দিল জিটিএ। দার্জিলিঙের ত্রিবেণী এলাকায় তিস্তা এবং রঙ্গিত, দুই নদী মিশেছে। বৃহস্পতিবার এ বার থেকে বছরের আট মাস সেখানে মাছ ধরার সুযোগ মিলবে বলে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) সূত্রে জানানো হয়।
প্রজননের জন্য বর্ষার সময়টুকু অর্থাৎ মে থেকে অগস্ট মাস বাদ রেখে নদীতে মাছ ধরতে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। পর্যটকেরা ১ হাজার টাকা দিয়ে লাইসেন্স করিয়ে সারা বছর মাছ ধরতে পারবেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা অর্ধেক দামে একই সুযোগ পাবেন। যদিও, পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই লাইসেন্স ছাড়াও মাছ ধরার সুযোগ রেখেছে জিটিএ। এক ঘণ্টা মাছ ধরার জন্য ৫০ টাকা দিতে হবে পর্যটকদের।
সমতলের মতো পাহাড়েও বিদ্যুতের তার ফেলে, কীটনাশক জলে ছড়িয়ে এবং ছোট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মাছ ধরার প্রবণতা বেড়েই চলছিল বলে জিটিএ-র তরফে জানানো হয়েছে। তারা জানায়, এই ধরনের প্রবণতা কিছুটা হলেও বন্ধ করার জন্য লাইসেন্স দিয়ে মাছ ধরার ব্যবস্থা চালু করা হল। তবে মূল উদ্দেশ্য অবশ্যই পর্যটকদের আকর্ষণ করা বলে দাবি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই পাহাড়ে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়াতে পুরনো কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র সংস্কার করা, বিলাসবহুল কয়েকটি রিসর্ট তৈরির প্রকল্প নিয়েছে জিটিএ। শুরু হয়েছে অ্যডভেঞ্চার ট্যুরিজমও। এ বার সেই তালিকায় সংযোজন মাছ ধরা।
জিটিএ-এর দাবি, ঘুরতে এসে অনেকেই নানা ধরনের খেলা অথবা সময় কাটানোর অভিনব উপায় খোঁজেন। মাছ ধরার সুযোগ থাকলে, তাঁরা আনন্দিত হবেন বলে জিটিএ-এর আশা। জিটিএ-এর মৎস্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যোতিকুমার রাই এ দিন থেকে মাছ ধরার সুযোগের সূচনা করেন। তিনি বলেন, “মাছ ধরাকে পর্যটনের সঙ্গে জুড়ে দিতে চাই। এতে দার্জিলিঙের প্রতি বেশি সংখ্যক পর্যটকের আকর্ষণ তৈরি হবে বলে মনে করছি। ইতিমধ্যেই মিরিক এবং জামুনি লেকেও মাছ ধরার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।”
মাছ ধরার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিধিনিষেধও রয়েছে। ১ কেজির কম ওজনের মাছ ধরলে তা জলেই ছেড়ে দিতে হবে। ১ কেজির বেশি ওজনের মাছ ধরলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সেই মাছ নিয়ে যেতে পারবেন। তবে কেজি প্রতি ১৫০ টাকা দরে সেই মাছ তাঁকে কিনে নিতে হবে। এ দিন অনেকের মধ্যে কালিম্পঙ থেকে জিগমে ওয়াংচুও ত্রিবেণী এলাকায় মাছ ধরেছেন। তিনি বলেন, “মাছ ধরার জন্য লাইসেন্স চালু হওয়ায় খুবই ভাল হয়েছে। সরকারি কর্মীদের নজরদারিও রয়েছে দেখলাম। এতে ভালই হবে। পোনা বা চারা মাছ ধরা যাতে সম্পূর্ণ বন্ধ করা যায় তার জন্য নজরদারি কড়া করতে হবে।” এ দিন অন্তত ৭৫ হাজার মাছের চারা ত্রিবেণীতে ছাড়া হয়। মাস খানেকের মধ্যে দেড় লক্ষ চারা মাছ ছাড়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।