বাঘের বাড়ি পাহাড়ে

সম্প্রতি সিকিমের জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গলের ছবি সামনে আসার পর থেকে এই আলোচনায় সরগরম বন দফতর। তাদের আরও বক্তব্য, সমতলে তো বহু দিন আগেই বাঘের দেখা বিরল হয়ে গিয়েছে। এ বার কি তা হলে ব্যাঘ্রদর্শনে পাহাড় চড়তে হবে?

Advertisement

সব্যসাচী ঘোষ 

মালবাজার শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:৩০
Share:

নেওড়া ভ্যালিতে ট্র্যাপ ক্যামেরায় বাঘের ছবি।

কথায় বলে, বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা। কিন্তু বাঘের বাসা কোথায়?

Advertisement

সম্প্রতি সিকিমের জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গলের ছবি সামনে আসার পর থেকে এই আলোচনায় সরগরম বন দফতর। তাদের আরও বক্তব্য, সমতলে তো বহু দিন আগেই বাঘের দেখা বিরল হয়ে গিয়েছে। এ বার কি তা হলে ব্যাঘ্রদর্শনে পাহাড় চড়তে হবে?

কেন এই প্রশ্ন? বন দফতর সূত্রেই বলা হচ্ছে, সম্প্রতি বাঘ যে সব জায়গা দেখা গিয়েছে, তার কোনওটিরই উচ্চতা ছ’হাজার ফুটের কম নয়। কখনও আলগাড়ার কাছে, কখনও নেওড়া ভ্যালির ট্র্যাপ ক্যামেরায়, কখনও আবার সিকিমের পাঙ্গোলাখা অভয়রাণ্যে। তিন জায়গার মধ্যে শেষেরটির উচ্চতাই সব থেকে বেশি, ৯৫৮৩ ফুট। সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশেও ১০ হাজার ফুটের থেকে বেশি উচ্চতায় বাঘের দেখা মিলেছে। বাঘের এই পাহাড় চড়ার ঘটনাই এখন পরিবেশবিদদের গবেষণার বিষয়, গবেষকদের পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘হাই অলটিটিউড টাইগার প্রজেক্ট’ বা ‘উচ্চ এলাকায় বাঘ প্রকল্প’।

Advertisement

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহু দিন ধরেই পাহাড় বাঘের চারণভূমি। জিম করবেটও পাহাড়ি এলাকায় মানুষখেকোর পিছনে ঘুরেছেন। এখন তাই নেওড়া, পাঙ্গোলাখা বা অরুণাচলে বাঘের খোঁজ পাওয়াটা আশ্চর্যের নয়।

বাঘ বিশেষজ্ঞদের দাবি, নেপাল ও ভুটানের পাহাড়ি এলাকাতেও বাঘ রয়েছে। ভুটানে প্রথম বাঘের দেখা মিলেছিল দু’দশক আগে। ২০১০-এ ভুটানের পাহাড়ি এলাকায় বাঘেদের নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করে বিবিসি। নেপালের ক্ষেত্রে উত্তরাখণ্ডের সঙ্গে সীমান্ত ঘেঁষা পাহাড়ি এলাকায় একাধিকবার বাঘের অস্তিত্ব টের পাওয়া গিয়েছে। তাই এই সব দেশ মিলিয়ে ‘হাই অলটিটিউড টাইগার প্রজেক্ট’-এর জন্যে মউ সই করে কাজও শুরু হয়। এ বারে নেওড়া ও পাঙ্গোলাখায় বাঘ গবেষণার তথ্য সেই প্রজেক্টের আওতায় আসাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা, বলছেন বিশেষজ্ঞেরা। নেওড়া ভ্যালির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, “হাই অলটিটিউড টাইগার প্রজেক্ট-এর সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা আমাদের বাঘের ছবির সঙ্গে সিকিমে তোলা বাঘের ছবি মিলিয়ে দেখে বলবেন, দু’টি একই বাঘ কিনা।’’ জলপাইগুড়ির পরিবেশ প্রেমী এবং গবেষক শ্যামাপ্রসাদ পাণ্ডে জানান, “সুন্দরবনের বাদা বনে বাঘের স্বাভাবিক বসতি যেমন বিশ্ববাসীর কাছে বিস্ময়, ঠিক তেমনই হিমালয়ের এই পার্বত্য এলাকায় বাঘের দেখা পাওয়াও বিস্ময়ের।’’ সিকিমের এক বনকর্তা জানান ‘‘যে জঙ্গলে বাঘ থাকে, সেই জঙ্গল অনেক বেশি সমৃদ্ধশালী হিসেবে গণ্য হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন