জমায়েত: মাদারিহাটে বাসিন্দাদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
বনকর্মীর গুলিতে মৃত বন দফতরের অস্থায়ী কর্মী মার্কোস এক্কার দেহ ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁর পরিবার। শুক্রবারের ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বনমন্ত্রী বিনয় বর্মনও। তিনি এদিন বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছি৷’’
শনিবার সন্ধেয় মার্কোসের দেহ জলদাপাড়ার রে়ঞ্জ অফিসে আনা হলে তা নিতে অস্বীকার করেন পরিবারের লোকজন। তাঁরা জানিয়ে দেন, ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি ও মৃতের পরিজনদের কাউকে চাকরি ও ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি মিললে তবেই তাঁরা দেহ নেবেন। এর পরই মাদারিহাট-টোটোপাড়া সড়কে রেঞ্জ অফিসের সামনে বিক্ষুব্ধদের ভিড় বাড়তে থাকে। শেষে প্রশাসন ও বনকর্তাদের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। রাতে মার্কোসের দেহ নেয় পরিবার।
মার্কোসের মৃত্যুর ঘটনায় এদিন সকালেই মাদারিহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করে তাঁর পরিবার। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি ও মৃতের পরিবারকে চাকরি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে এদিন সকাল থেকে মাদারিহাট-টোটোপাড়া রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ সন্ধে ৬টার পর ওই অবরোধ উঠে যায়। তার পরই সাড়ে ৬টা নাগাদ মার্কোসের দেহ আনা হয় রেঞ্জ অফিসে। পরিবারের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, তাঁদের দাবি মানা না হলে মৃতদেহ নেবেন না। তাঁদের দাবির সমর্থনে বিক্ষোভের আকার বাড়তে থাকে। দু’ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভের জেরে পুলিশ ও বনকর্তারা রেঞ্জ অফিসে আটকে থাকেন। শেষে মৃতের পরিবার দাবি পূরণের আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ তুলে নেন। রাত ৯টায় দেহ নিয়ে চলে যান পরিবারের লোকজন।
শুক্রবার সকালে জলদাপাড়ার জাতীয় উদ্যানের লঙ্কাপাড়া রেঞ্জের তিতি ৩ নম্বর কম্পার্টমেন্টে চারজন বনকর্মী টহলে যান৷ বনকর্তাদের দাবি, জঙ্গলে আচমকাই তাঁদের সামনে একটি হাতি এসে পড়ে৷ হাতিটিকে তাড়ানোর গোলমালের মধ্যেই মুহূর্তের অসতর্কতায় বনকর্মী কবি রাভার হাতে থাকা বন্দুক থেকে আচমকাই গুলি ছিটকে যায়৷ গুলি গিয়ে লাগে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অস্থায়ী কর্মী মার্কোস এক্কার শরীরে৷ বনকর্মীরা গুরুতর জখম মার্কোসকে প্রথমে মাদারিহাট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং পরে আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ আলিপুরদুয়ার হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়৷
ঘটনার পর কবি রাভা দাবি করেন, বন শ্রমিক হওয়ায় তাঁর বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণ নেই৷ টহলের সময় আচমকাই হাতিটি সামনে চলে এসেছিল৷ পালাতে গিয়ে কোনওভাবে বন্দুকের ট্রিগারে তাঁর হাত পড়ে যায়৷