ধৃত বিজয়। — নিজস্ব চিত্র
অস্ত্র পাচারে অভিযুক্ত জিটিএ-র এক প্রাক্তন সদস্যের ভাইকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গত মঙ্গলবার দার্জিলিঙের জোড়বাংলো এলাকা থেকে বিজয় ঠুলুঙ্গকে গ্রেফতার করা হয়। এ দিন বুধবার তাকে জেলা আদালতে পাঠিয়েছিল সিআইডি। ধৃত বিজয় প্রাক্তন জিটিএ সদস্যের সঞ্জয়বাবু ভাই। জেলা আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিজিএম জয়দীপ ভট্টাচার্য ধৃতকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। দু’বছর আগে নভেম্বর মাসে অসম-দার্জিলিং-শিলিগুড়ি জুড়ে প্রচুর অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলি দার্জিলিঙে পাঠানো হচ্ছিল বলে পুলিশ জানতে পারে। গ্রেফতার হয় দু’জন। তৎকালীন জিটিএ সভাসদ সঞ্জয় ঠুলুঙ্গ অস্ত্র কিনে দার্জিলিঙে জড়ো করার মতলব করছিলেন বলে ধৃতরা জেরায় কবুল করেছে বলে পুলিশ জানায়। মামলার তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। অভিযোগ ওঠার পরেই সঞ্জয় ঠুলুঙ্গ ফেরার হয়ে যায় বলে সিআইডি দাবি করে। পরে সঞ্জয়কে দল থেকে সাসপেন্ড করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। দার্জিলিং জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী পঙ্কজ প্রসাদ বলেন, ‘‘জেরা করার জন্য ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। মাননীয় বিচারক তা মঞ্জুর করেছেন।’’
সিআইডির তরফে দাবি করা হয়েছে, বিজয়কে মূলত রংলি-রংলিয়ট থানায় দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ২৭ মাইল এলাকা থেকে একটি রাইফেল এবং ২২টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করে সিআইডি। একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে বন্দুকের সঙ্গে বেশ কিছু লিফলেটও উদ্ধার হয়েছে। গোর্খা লিবারেশন আর্মি নামে একটি সংগঠন পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি আদায়ে অস্ত্র আন্দোলন করার ডাক দেওয়া হয়েছিল বলে সিআইডির দাবি। এই মামলাতেই বিজয়কে ধরা হয়েছে।
অস্ত্র উদ্ধারের সূত্রপাত হয়েছিল সে বছরেরই নভেম্বর মাসে। অসমের চিরাং জেলায় অত্যাধুনিক রাইফেল, গুলি সমতে একটি গাড়ি আটক করে সে রাজ্যের পুলিশ। গাড়িতে থাকা দুই ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করে অসম পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে একজন জিএলপি সদস্যও ছিলেন। জেরায় ধৃতরা দাবি করে, জিটিএ-র সদস্য সঞ্জয় ঠুলুঙ্গের নির্দেশে নাগাল্যান্ড থেকে অস্ত্র কিনে দার্জিলিঙে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুলিশের দাবি, গাড়ি থেকে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। ধৃতদের জেরা করে এরপরে শিলিগুড়ি লাগোয়া একটি এলাকা এবং দার্জিলিংঙের জোড়বাংলো থেকে কিছু অস্ত্র উদ্ধার করেছিল সিআইডি। ধৃতের আইনজীবী তরঙ্গ পণ্ডিত দাবি করেন, ‘‘একটি পোড়ো বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। এর সঙ্গে বিজয় ঠুলুঙ্গের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ সূত্রের খবর, ধৃতকে অসমেও নিয়ে যাওয়া হবে। মোর্চার তরফে জানানো হয়েছে, যে বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলছে তা নিয়ে আপাতত দলের কেউ মন্তব্য করবেন না।