ইউনিফর্ম সূর্য সেনে

সূর্যসেন কলেজের কলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্যের ছাত্র পঞ্চম ঘোষ বলেন, ‘‘এতে ভাল হবে বলেই মনে করি। কে কলেজের পড়ুয়া কে নয় তা বোঝা যায় না। নির্দিষ্ট পোশাক হলে চেনা সহজ হবে। তা ছাড়া যে যা খুশি আধুনিক ফ্যাশনের পোশাক কলেজে পরে আসবে সেটাও অনেক সময় দৃষ্টিকটু লাগে বলে আমার ব্যক্তিগত মত।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ১৫:৩০
Share:

এ বার থেকে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্যও স্কুলের মতো নির্দিষ্ট ‘ইউনিফর্ম’ চালু করতে চলেছে শিলিগুড়ির সূর্যসেন কলেজ। শুক্রবার কলেজ চত্বরে নতুন ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সে কথা জানান কলেজ কর্তৃপক্ষ। পোশাক বেঁধে দেওয়ার এই নয়া নির্দেশে অবশ্য ছাত্রমহল থেকে তেমন আপত্তি ওঠেনি। এ দিন কলেজের ওই নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

Advertisement

কলেজে ভর্তি সব ছাত্রদেরই প্রায় ভোটাধিকার থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক এই ছাত্রদের স্বাধীনতায়, ইচ্ছেমতো পোশাক নির্বাচনের উপরে এই বিধি নিষেধের হঠাৎ প্রয়োজন পড়ল কেন? কার্যত সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ হেন নির্দেশ আরোপের নজির রাজ্যে বিরল। মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, ‘‘এটি কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অনেক কলেজেই এই নিয়ম আছে। বিশেষ করে বেশ কিছু আইন কলেজে ও বেসরকারি কলেজগুলিতে।’’ রবীন্দ্রনাথবাবুও বলেন, ‘‘যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভাল হয়েছে। এমনটা হওয়া উচিত।’’ কিন্তু এই নিয়ম জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে নাকি? গৌতমবাবুর উত্তর, ‘‘পুলিশ, সেনা, ডক্তারদের তো নির্দিষ্ট পোশাক থাকে। একটা ‘আইডেনটিটি’ তৈরি হয়। সেটা তৈরি হতে একটু সময় লাগবে। তবে এটা ভাল ব্যাপার।’’

সূর্যসেন কলেজের কলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্যের ছাত্র পঞ্চম ঘোষ বলেন, ‘‘এতে ভাল হবে বলেই মনে করি। কে কলেজের পড়ুয়া কে নয় তা বোঝা যায় না। নির্দিষ্ট পোশাক হলে চেনা সহজ হবে। তা ছাড়া যে যা খুশি আধুনিক ফ্যাশনের পোশাক কলেজে পরে আসবে সেটাও অনেক সময় দৃষ্টিকটু লাগে বলে আমার ব্যক্তিগত মত।’’

Advertisement

কলেজ পরিচালন কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ পাল জানান, এ ব্যাপারে ছাত্র সংসদের সঙ্গেও ইতিমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। তাঁরাও সহমত হয়েছেন। টিএমসিপি পরিচালিত কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল সরকার বলেন, ‘‘কলেজের পরিবেশ এতে সুন্দর হবে। ছাত্রছাত্রীদের সকলেই বিষয়টি নিয়ে খুশি। অনেকে অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তাঁরাও সমর্থন করছেন। পোশাক তৈরিতে পড়ুয়াদের কারও আর্থিক সমস্যা হলে ছাত্র সংসদের তহবিল থেকে সাহায্যের কথা ভাবা যেতে পারে।’’ অধ্যক্ষ প্রণবকুমার মিশ্রও জানান, এ বছর নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে ওই ব্যবস্থা চালু করতে তাঁরা উদ্যোগী।

নতুন এই বিধি নিয়ে কোনও রকম আপত্তি ওঠেনি বিরোধী শিবির থেকেও। এসএফআইয়ের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সৌরভ দাস বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট পোশাক থাকা ভাল। আমরাও এক সময় ওই দাবি তুলেছিলাম। তবে ওই কলেজে গরিব পরিবারের অনেক পড়ুয়া আছেন। তাঁদের সমস্যা হতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পোশাক দিলে সব চেয়ে ভাল হয়।’’ অখিল ভারতীয় বিদার্থী পরিষদের শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং সাংগঠনিক বিভাগের সহ সভাপতি ত্রিদিব সাহা বলেন, ‘‘আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি।’’

এ দিন পড়ুয়াদের সাইকেল, বাইক পার্কিং-এর জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী মঞ্চে ৩ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন