রাখির দিন থেকেই মোবাইল বন্ধ

নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন আগে, ১৫ অগস্ট মায়ের সঙ্গে দেখা করতে শান্তিনগরের বাড়িতে গিয়েছিলেন সঙ্গীতা কুণ্ডু। প্রায় ঘন্টাখানেক সময় কাটিয়েছিলেন মা’র সঙ্গে। মা অঞ্জলিদেবীকে কথা দিয়েছিলেন, তিন দিন পরেই রাখি পূর্ণিমায় সকাল সকাল বাড়িতে এসে দাদাকে রাখি পরাবেন।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১২
Share:

নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন আগে, ১৫ অগস্ট মায়ের সঙ্গে দেখা করতে শান্তিনগরের বাড়িতে গিয়েছিলেন সঙ্গীতা কুণ্ডু। প্রায় ঘন্টাখানেক সময় কাটিয়েছিলেন মা’র সঙ্গে। মা অঞ্জলিদেবীকে কথা দিয়েছিলেন, তিন দিন পরেই রাখি পূর্ণিমায় সকাল সকাল বাড়িতে এসে দাদাকে রাখি পরাবেন। কিন্তু ১৮ অগস্ট দিনভর কেটে রাত গড়িয়ে গেলেও সঙ্গীতা আর রাখি পরাতে আসেননি। কথা দিয়েও না আসায় উদ্বিগ্ন অঞ্জলিদেবী সেদিন বারবার মেয়ের মোবাইলে ফোন করেছিলেন।

Advertisement

তাঁর দাবি, প্রতিবারই সঙ্গীতার মোবাইল ফোন সুইচড অফ বলেছে। এমনকী, সঙ্গীতা যে জিম, পার্লার ও ডান্স অ্যাকাডেমির কর্মী ছিলেন, সেই সংস্থার মালিককেও ফোন করে সদুত্তর পাননি। সেই দিন থেকেই সন্দেহের সূত্রপাত।

তরুণীর দাদা শম্ভু কুণ্ডুর কথায়, ‘‘মা পরপর কয়েকদিন বোনকে ফোন করে যায়। মোবাইল টানা বন্ধ থাকায় সম্দেহ জোরাল হয়। তবে কখনওই ভাবিনি, বোন এ ভাবে নিখোঁজ হয়ে যাবে।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বড় বোনের হাত থেকে রাখি পরা হল না। ওঁর যে কী হয়েছে, ভগবান জানেন।’’

Advertisement

সঙ্গীতা যে সংস্থায় কাজ করতেন, তাদের সেবক রোডের অফিস-ফ্ল্যাট থেকে গত ১৭ অগস্ট সঙ্গীতা নিখোঁজ হয়ে যান। সংস্থার মালিক পরিমল সরকার বারবার দাবি করেছেন, ঘটনার দিন রাত ৯টার পর থেকে সঙ্গীতার আর খোঁজ মেলেনি।

ঘটনাচক্রে, সেবক রোডের যে ফ্ল্যাটে সঙ্গীতা দুই বছর ধরে থাকতেন, সেটির মালিক পরিমলবাবুই। তরুণীর মা অঞ্জলীদেবী জানান, স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের পর থেকে মেয়ে ওই ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করে। ১৫ দিন পর পর আসত। ঘন্টা খানেক থেকে শরীরের খোঁজ নিয়ে চলে যেত। রাখি পরাতে আসবে বলে গিয়েছিল। পরিমলবাবুই মেয়ের দেখাশোনা করতেন। ঘটনার ৯ দিন পর ওই সংস্থার মালিকই সঙ্গীতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ভক্তিনগর থানায় মিসিং ডায়েরি করেছিলেন।

সোমবার অঞ্জলিদেবী জানান, রাখি পূর্ণিমার দিন মেয়েকে মোবাইলে না পেয়ে পরিমলবাবুকে কয়েকবার টেলিফোন করেছিলেন। উনি প্রতিবারই কাজে বাইরে আছেন বলে জানিয়েছিলেন। এমনকি, সঙ্গীতা কোথায় তা পরিমলবাবু জানেন না বলে জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘উনি ২৬ অগস্ট মিসিং ডায়েরি করেন, অথচ আমাদের কিছুই জানাননি। ২ সেপ্টেম্বর পরিমল বলেন, উনিও পুলিশে অভিযোগ করেছেন।’’

এর পরে ৫ সেপ্টেম্বর সঙ্গীতার দাদা শম্ভুবাবু বোনকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। শম্ভুবাবু বলেন, ‘‘স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর থেকে বোন পরিমলের ফ্ল্যাটে থাকত। আমরা বিরক্ত হয়ে কথাবার্তা বলতাম না। কিন্তু ভাঁটফোটা দিত। রাখি পরাত। রাখির দিন ও আর এল না। কোথায় আছে, কীভাবে আছে, জানি না। বোনের হদিস পেতেই হবে। না হলে শিলিগুড়িতে কর্মরতা মেয়েদের নিরাপত্তা বলে কিছু থাকবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন