উদ্বোধনের আট মাস পেরোতে চলল। এখনও পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে বাসস্ট্যান্ড চালু না হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে নিত্যযাত্রী ও বাসিন্দাদের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে সন্ধে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থানা থেকে ১০০ মিটার দূরের ওই বাসস্ট্যান্ড চত্বরে নাগাড়ে নেশা ও জুয়ার আসর বসছে বলে অভিযোগ। বাসস্ট্যান্ডটি চালু না হওয়ায় হেমতাবাদ সদর এলাকার রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কে যানজট ও যাত্রীদের দুর্ভোগও লেগে রয়েছে বলে নিত্যযাত্রী ও বাসিন্দাদের দাবি।
জেলাশাসক আয়েশা রানির দাবি, প্রশাসনিক কিছু কারণে বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি ঢোকা ও বার হওয়ার অ্যাপ্রোচ রাস্তা তৈরির কাজ সামান্য বাকি রয়েছে। পূর্ত দফতর খুব শীঘ্রই কাজ শেষ করে বাসস্ট্যান্ড চালু করবে।
২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দে হেমতাবাদ থানা সংলগ্ন দু’বিঘা সরকারি জমিতে বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ শুরু করে পূর্ত দফতর। ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়ালপোখরে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাসস্ট্যান্ডটির উদ্বোধন করেন। নিত্যযাত্রী ও বাসিন্দাদের দাবি, হেমতাবাদে বাসস্ট্যান্ড না থাকায় বিভিন্ন যানবাহন রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের ওঠানো ও নামানোর কাজ করে। ফলে দিনভর রাজ্য সড়কে যানজট লেগে থাকে। যাত্রীরা সারা বছর রাজ্য সড়কের ধারে খোলা আকাশের নিচে রোদ ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে গাড়ি ধরার জন্য অপেক্ষা করতে বাধ্য হন। প্রসঙ্গত, হেমতাবাদের রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে প্রতিদিন বালুরঘাট, রায়গঞ্জ ও শিলিগুড়ি রুটের প্রায় ৯০টি বাস ছাড়াও কয়েকশো যাত্রীবাহী ট্রেকার ও অটো রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, বাঙালবাড়ি সহ বিভিন্ন রুটে চলে।
হেমতাবাদ সদর এলাকার বাসিন্দা মুদি ব্যবসায়ী রাম সরকার ও গৃহবধূ পাপিয়া দাসের দাবি, খোদ মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করার আট মাস পেরোতে চললেও এখনও পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ডটি চালু না হওয়া অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তাঁদের কথায়, দীর্ঘ দিন ধরে গভীর রাত পর্যন্ত থানা থেকে ঢিলছোঁড়া দুরত্বের ওই বাসস্ট্যান্ড চত্বরে নেশা ও জুয়ার আসর বসছে। এতে এলাকার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
ব্লক তৃণমূল সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় দত্তের দাবি, ‘‘দলের তরফে এক মাস আগে জেলাশাসককে বাসস্ট্যান্ডটি চালুর দাবি জানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশকে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে।’’
হেমতাবাদ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি গোপাল মজুমদার ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পালের কটাক্ষ, ‘‘ভোটের আগে রাজনৈতিক সুবিধা পেতেই সার্বিক পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ না করে মুখ্যমন্ত্রী বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধন করেন। তারই খেসারত সকলকে দিতে হচ্ছে।’’