স্ট্রেচারে শুয়েই জবানবন্দি নির্যাতিতার

হাসপাতাল সূত্রের খবর, উঠে দাঁড়াতে পারছেন না নির্যাতিতা, বসতেও পারছেন না। ওষুধ ছাড়া পথ্য বলতে শুধু স্যুপ। মঙ্গলবার রাতে দেওয়াও হয়েছিল স্যুপ। কাঁপা কাঁপা হাতে স্যুপের বাটি ধরতেই চামচ পড়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:৫১
Share:

প্রহরা: নির্যাতিতাকে আনার আগে আদালতে প্রহরা। নিজস্ব চিত্র

স্ট্রেচারে শুয়েই এজলাসে পৌঁছলেন ধূপগুড়ির নির্যাতিতা। স্ট্রেচারে শুইয়েই তাঁর গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত হল জলপাইগুড়ি আদালতে। গত রবিবার থেকে নির্যাতিতা জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি। উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই। মাঝে মধ্যেই ব্যথায় কঁকিয়ে উঠছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁর গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত না করার পরামর্শ দিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সে কথা শুনতে রাজি হয়নি পুলিশ। হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে আদালতে নিয়ে এসে জবানবন্দি নথিবদ্ধ করানো হয়েছে। কেন এত তাড়াহুড়ো করা হল তা নিয়ে ক্ষুব্ধ চিকিৎসকতেদের বড় অংশ। জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “নির্যাতিতার সঙ্গে মেডিক্যাল টিমও ছিল। সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের কড়া শাস্তি দিতেই যাবতীয় পদক্ষেপ করানো হচ্ছে।”

Advertisement

এ দিকে হাসপাতাল সূত্রের খবর, উঠে দাঁড়াতে পারছেন না নির্যাতিতা, বসতেও পারছেন না। ওষুধ ছাড়া পথ্য বলতে শুধু স্যুপ। মঙ্গলবার রাতে দেওয়াও হয়েছিল স্যুপ। কাঁপা কাঁপা হাতে স্যুপের বাটি ধরতেই চামচ পড়ে যায়। উঠে বসে স্যুপ খাওয়ার ক্ষমতাও নেই ধূপগুড়ির নির্যাতিতা আদিবাসী মহিলার। মঙ্গলবারের মতো বুধবারও মেডিসিন বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে আরও এক ইউনিট রক্ত দিতে হয়েছে। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা রক্ত দেওয়ার পরেও কেন তেমন ভাবে বাড়ছে না তা নিয়ে চিকিৎসকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রক্তের চাপ অর্থাৎ ব্লাড প্রেসার এবং পালস রেটও ওঠানামা করে চলেছে বলে অভিমত কর্তব্যরত চিকিৎসকদের।

গত শনিবার নির্যাতিতা মহিলার উপর অত্যাচার চালানো হয়। ধর্ষণের পরে যৌনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। নির্যাতিতার গোপনাঙ্গে অসংখ্য ক্ষত হয়। প্রচুর রক্তপাতও হয়েছে। সারা শরীরেই আঁচড়, কামড়ের দাগ রয়েছে।

Advertisement

শরীরের নীচের অংশই জখমের পরিমাণ বেশি বলে মেডিক্যাল পরীক্ষার পরে চিকিৎসকরা দাবি করেছেন। সে কারণে হাসপাতালের বিছানাতে বসে থাকতেও সমস্যা হচ্ছে। নির্যাতিতার দেখভালের জন্য পৃথক মেডিক্যাল টিমও তৈরি হয়েছে। সর্বক্ষণ বিশেষজ্ঞ চিকিতসকের নজরদারি চলছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।

কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ধূপগুড়ির নির্যাতিতার আদিবাসী মহিলার শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক । তবে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তাঁরা হাসপাতালেই গোপন জবানবন্দি নেওয়ার পথও খোলা রেখেছিলেন, কিন্তু ওই মহিলাই কোর্টে আসেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন