Dhupguri by Election

বিধানসভা লাগোয়া এলাকায় ‘ওয়ার রুম’ গৌতমের

দলের অঞ্চল সভাপতিদের পর পর ফোন করতে শুরু করলেন। সকলকে প্রায় একই কথা বললেন, “কত ভোট হল? বাকিদের ভোট করাও তাড়াতাড়ি।”

Advertisement

অনির্বাণ রায়

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:২৮
Share:

ধূপগুড়ি বিধানসভা লাগোয়া মাদারিহাটের গয়েরকাটার ‘ওয়ার রুমে’ গৌতম দেব, খগেশ্বর রায়। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

ফোনে ধরলেন এক পুলিশ অফিসারকে। চড়া সুরে অভিযোগ, “বিজেপির জেলা সভাপতি মোটরবাইক নিয়ে ধূপগুড়িতে ঘুরছেন। উনি ধূপগুড়ির ভোটার নন। আপনারা দেখছেন না।” ফোন রেখে আপ্ত সহায়ককে বললেন, সেক্টর অফিসারকে ফোন করতে। সেক্টর অফিসারকে ফোনে বললেন, “বিজেপির কিছু লোক ভোট কেন্দ্রের সামনে জড়ো হয়ে আছে, দেখুন।”

Advertisement

কিছু পরে, দলের অঞ্চল সভাপতিদের পর পর ফোন করতে শুরু করলেন। সকলকে প্রায় একই কথা বললেন, “কত ভোট হল? বাকিদের ভোট করাও তাড়াতাড়ি।” ফোন করেন এক ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রভাবশালী কর্তাকে। বললেন, “আপনাদের সব ভোট হয়েছে তো? কোনও অসুবিধে হলে জানাবেন।”

সন্ধে ছুঁইছুঁই। অন্ধকার নামছে খুটিমারির জঙ্গলে। গয়েরকাটা পূর্ত দফতরের বাংলোর বসার ঘরে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের সামনে ল্যাপটপ খোলা। ল্যাপটপে খোলা ফাইলে অন্তত আড়াইশো নাম এবং ফোন নম্বর। গত সাত দিন ধরে এই নাম এবং নম্বরগুলি তোলা হয়েছে ল্যাপটপে। তালিকায় রয়েছে ধূপগুড়ি বিধানসভার আওতায় থাকা তৃণমূলের সব অঞ্চল সভাপতি, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য, পুর প্রতিনিধি এবং ওয়ার্ড তৃণমূলের সভাপতিদের ফোন নম্বর। রয়েছে সেক্টর অফিসার, পর্যবেক্ষক এবং প্রশাসনের আধিকারিকদের নম্বরও। ফোন করে জানছেন কোন বুথে কত ভোট পড়ছে, কোথাও তৃণমূলের কোনও অভিযোগ থাকলে, তা-ও জেনে নিয়ে প্রশাসনকে জানাচ্ছেন।

Advertisement

ধূপগুড়ি বিধানসভা লাগোয়া এলাকার এই বাংলোকেই মঙ্গলবার কার্যত তৃণমূলের ‘ওয়ার রুম’ বানিয়ে নিয়েছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র তথা তৃণমূলের ধূপগুড়ি নির্বাচন কমিটির কো-চেয়ারম্যান গৌতম দেব। শিলিগুড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলেন কয়েক জন অনুগামী এবং পেশাদারকেও। এই বাংলোতেই ছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক খগেশ্বর রায়, জেলা তৃণমূলের সভাপতি মহুয়া গোপও।

ধূপগুড়ি ভোটের প্রচারেও টানা এসেছেন গৌতম দেব। এই বাংলোতে এসেই উঠেছিলেন প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। উপনির্বাচনের আগের রাতে পূর্ত দফতরের বাংলোয় বসেছিল তৃণমূলের গোপন বৈঠক। গৌতম দেব বলেন, “এই বাংলোটি ধূপগুড়ির পাশে। কিন্তু এই বিধানসভা এলাকার মধ্যে পড়ে না। কাজেই এখানে থাকতে কোনও সমস্যা নেই।”

এ দিন দিনভর তিনি কখনও ভোট শতাংশ খোঁজ করেছেন, কখনও নেতাদের ভোটারদের বুথে আনতে বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সন্ধেয় ধূপগুড়ি ভোট শেষের পরে, বললেন, “ধূপগুড়ির কাজ শেষ। এ বার শিলিগুড়ির কাজ করতে হবে।”

তৃণমূলের ‘ওয়ার রুম’ নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর কটাক্ষ, “তৃণমূলের অনেকে নেতা-কর্মীই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মাঠে নামেননি। তাঁদের চাপ দিতেই এবং দ্বন্দ্ব থামাতেই নেতারা গয়েরকাটায় ঠায় বসে ছিলেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন