মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিচ্ছেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের স্ত্রী তথা ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শুক্লা দেব। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
পুরবোর্ডের ওপর চাপ তৈরি করতে এ বার ময়দানে নামলেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের স্ত্রী শুক্লাদেবী।
তিনি শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। শুক্রবার ওয়ার্ডের একগুচ্ছ সমস্যা নিয়ে শুক্লাদেবীর নেতৃত্বে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করে এক প্রতিনিধি দল। মেয়রকে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। রাস্তা দখল করে থাকা গুমটি ঘর, অবৈধ পার্কিং দ্রুত না সরালে এলাকায় জন বিক্ষোভ থেকে আইনশৃঙ্খলার সমস্যাও তৈরি হতে পারে বলে শুক্লাদেবীর স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে মেয়রকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ড কমিটির তরফে স্মারকলিপি হলেও, এর পেছনে রাজনীতির সমীকরণ দেখছেন শাসক-বিরোধী সব দলের নেতারাই।
মেয়র অশোকবাবু অবশ্য ‘পাল্টা চাপে’র নীতিতে বল ঠেলে দিতে চেয়েছেন প্রশাসনের দিকে। সমস্যা সমাধানে পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতার চেয়ে বৈঠক ডেকেছেন তিনি। শহরের যানজট সমাধানে পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতা মিলছে না বলে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোকবাবু। এ দিনও রাজ্যের তৃণমূল সরকারের হাতে থাকা পুলিশ-প্রশাসনের উপরেই আঙুল তুলেছেন মেয়র। রাজনীতির প্রসঙ্গে না ঢুকে অশোকবাবু বলেন, ‘‘শুক্লাদেবীকে আমি দীর্ঘ দিন ধরেই চিনি। ওঁদের দাবির সঙ্গেও আমি সম্পূর্ণ একমত। খুবই ভাল আলোচনা হয়েছে। এই সমস্যা সমাধান পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।’’ মেয়র জানিয়েছেন, যানজট-অবৈধ পার্কিং সমস্যা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্রুত বৈঠক ডাকা হচ্ছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা জানিয়েছেন, পুলিশের করণীয় যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়ে থাকে।
১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একাধিক স্কুল-কলেজ-সরকারি অফিস-আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ওয়ার্ডে ভিড় লেগেই থাকে। স্মারকলিপিতে অভিযোগ, যত্রতত্র অবৈধ পার্কিং চলছে। মেয়েদের স্কুলের পাশে অবাঞ্ছিত লোকেদের আনাগোনা, রাতের বেলায় নানা অসামাজিক কাজকর্মও হয় বলে দাবি করা হয়েছে। ফুটপাত দখল করে অসংখ্য দোকান গজিয়ে ওঠায় জঞ্জাল-ভিড়ে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত বলে দাবি। শুক্লাদেবী বলেন, ‘‘এমন চলতে থাকলে ওয়ার্ডে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবে। তাই মেয়রকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলেছি।’’
বৃহস্পতিবারই তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব গৌতমবাবুকে ফের জেলা সভাপতির দায়িত্ব ফিরিয়ে দিয়েছে। তার পর দিনই স্ত্রী শুক্লাদেবীর মেয়রের কাছে দাবি-দাওয়া জানাতে যাওয়া নেহাতই ঘটনাচক্র বলে দাবি করে গৌতমবাবুর সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘১৭ নম্বর ওয়ার্ড গুরুত্বের দিক থেকে পুরসভার বাড়তি নজরদারির দাবি রাখে। তা যথাযথ না হওয়াতেই বাসিন্দাদের ক্ষোভের কথা কাউন্সিলর জানিয়েছেন।’’