কলকাতার বৈঠকে নেই রবীন্দ্রনাথ

তৃণমূল সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীই রবি ঘোষকে বৈঠকে আসতে নিষেধ করেছিলেন। বৈঠকে না এসে কোচবিহারে যে সব এলাকায় বিজেপির হামলার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ০৭:১৯
Share:

উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

কালীঘাটে লোকসভা ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণের বৈঠকে অনুপস্থিত রইলেন কোচবিহারের জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। শনিবার বিকেলে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন অন্যান্য জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করছেন, তখন রবি ঘোষ কোচবিহারের সিতাইয়ে আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করছিলেন।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীই রবি ঘোষকে বৈঠকে আসতে নিষেধ করেছিলেন। বৈঠকে না এসে কোচবিহারে যে সব এলাকায় বিজেপির হামলার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। গত শুক্রবার তৃণমূলের এক রাজ্যনেতা রবি ঘোষকে ফোন করে দলনেত্রীর নির্দেশ জানান এবং দলের পরাজিত প্রার্থী পরেশ অধিকারীকে কলকাতায় পাঠাতে বলেন। এ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে অবশ্য গুঞ্জনও রয়েছে। দলের একাংশের দাবি, কোচবিহার আসনটি তৃণমূলের কাছে ‘সম্মানের লড়াই’ ছিল। তাতে হেরে যাওয়ায় দল জেলা নেতাদের উপর ক্ষুব্ধ। রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বক্তব্য, “দলনেত্রীর নির্দেশেই আক্রান্তদের গ্রামে গ্রামে যাচ্ছি। কর্মীদের মনোবল বাড়াতে দিনরাত গ্রামে ঘুরছি।”

এ দিকে, এখনই উত্তরের তিন জেলার মূল সংগঠনে ‘হাত’ দেওয়ার কথা ভাবেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে দুই নেতার সরকারি পদ কেড়ে নিয়ে সেই পদে লোকসভা ভোটে পরাজিত প্রার্থীদের বসানো হয়েছে। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়িতে হেরেছে তৃণমূল। আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ির পরাজিত প্রার্থীদের সরকারি পদে নিয়ে এসেছেন মমতা। আলিপুরদুয়ারের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী দশরথ তিরকেকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান এবং জলপাইগুড়িতে পরাজিত বিজয়চন্দ্র বর্মণকে এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান পদে আনা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী চেয়ারম্যান ছিলেন এসজেডিএ-এর।

Advertisement

কোচবিহার শহর এলাকা কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভার মধ্যেই পড়ে। গত বিধানসভা ভোট থেকে কোচবিহার শহরে তৃণমূলের ভোট কমেছে। এ বারের লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে টপকে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। দলীয় সূত্রের খবর, ভোটের প্রচারে সে ভাবে পাওয়া যায়নি বলেই বিধায়ক মিহির গোস্বামীর সরকারি পদে কোপ পড়েছে। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। মিহির গোস্বামীর সঙ্গে অবশ্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

সূত্রের খবর, এ দিন জলপাইগুড়ির প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সৌরভের কাছে জানতে চান, তিনি দলে কতটা সময় দেন। জলপাইগুড়ি জেলা ছাড়াও নিজের বিধানসভা আলিপুরদুয়ারও দেখতে হয় সৌরভকে। এর পরে তাঁর কাছেই মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যানের পদ বিজয়চন্দ্র বর্মণকে দিয়ে দেবেন কি না। সৌরভ মাথা নাড়েন। সৌরভ আজ রবিবারই জেলা ফিরছেন। তিনি বলেন, “ময়নাগুড়ির ধর্মপুরে যাব। সেখানে একটি পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করতে হবে।” উত্তরবঙ্গের কোথাও পার্টি অফিস দখল অথবা হামলা হলে সব জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সৌরভ চক্রবর্তীকে ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর নির্দেশও দলনেত্রী দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মোহন শর্মার কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, নির্বাচনের আগে ভাল ফল হবে বলা হলেও এই ফল হল কেন। রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জেলা সভাপতির পদ থেকে থেকে মোহন অব্যাহতি নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন বলেও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন