শিশুকন্যার উপরে নির্যাতনে অভিযুক্ত আইনজীবী

আদর যত্ন করে বড় করার আশ্বাস দিয়ে বাড়িতে নিয়ে দশ বছরের এক শিশু কন্যার উপরে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ির এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২১
Share:

আদর যত্ন করে বড় করার আশ্বাস দিয়ে বাড়িতে নিয়ে দশ বছরের এক শিশু কন্যার উপরে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ির এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

মঙ্গলবার ওই শিশুর বাবা পেশায় রিকশা চালক জয়দেব সরকার কোতোয়ালি থানার মহিলা সেলে আইনজীবী সুমিত কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, চোর অপবাদ দিয়ে তাঁর কন্যাকে শুধু মারধর করা হয়নি। গায়ে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে। সোমবার একই অপবাদে মারধর করা হয়। মঙ্গলবার ওই শিশুটির পরিবারের লোকজন মেয়েটির জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাও করান। তাঁরা চিকিৎসার কাগজপত্র পুলিশের কাছে জমা দেবেন বলেও জানিয়েছেন।

যদিও আইনজীবী সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি দেখছি বাড়ি থেকে সোনার গয়না, টাকা উধাও হচ্ছে। তবু শিশুটিকে সন্দেহ করতে মন চায়নি। চুরি বেড়ে গেলে দুদিন আগে ওকে জিজ্ঞেস করি। শিশুটি জানায় যখন বাড়ি ফাঁকা থাকে ওর বাবা আসে। আলমারি খুলে টাকা, সোনার গয়না চুরি করে নিয়ে যায়। তাই ওকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।” কোতোয়ালি থানার মহিলা সেলের ওসি কেএল শেরপা বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” সুকান্তনগর কলোনির বাসিন্দা, ওই শিশু প্রতিমা জানায়, গত তিনদিন থেকে চোর অপবাদ দিয়ে বাড়ির মালিক মারধর করছে। সোমবার বেল্ট দিয়ে পিটিয়ে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেওয়া হয় এবং রাতে বাবাকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। শিশুর শরীর জুড়ে কালশিটে দাগ। দু’জায়গায় ফোস্কা পড়েছে। শিশুর বাবা বলেন, “মেয়ে অসুস্থ বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আমাকে মারধর করা হয়। বলা হয় আমি সোনার অলঙ্কার, টাকা চুরি করতাম। এটা মিথ্যা অপবাদ।” রাতে পুলিশ ডেকে মেয়েকে সঙ্গে দিয়ে তাঁকে থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে জানান জয়দেববাবু। রাতেই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায় বলেন, “শিশুটিকে বাবার হাতে তুলে দিয়ে আমরা ছেড়ে দিই। ওই সময় কোন ওঅভিযোগ জানানো হয়নি।”

Advertisement

এদিকে শিশুর উপরে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ শুনে আইনজীবী সুমিতবাবু জানান, তিস্তা নদী বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় বেড়াতে গিয়ে তাঁরা রুগ্ন শিশুটিকে দেখি। দেখে খারাপ লাগে। শিশুটির মা নেই। দুই বোন এক ভাই। পরিবার থেকে ওঁকে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা পড়াশোনা করানোর অনুরোধ করা হয়। গত ১০ জানুয়ারি তিনি শিশুটিকে ওল্ড পুলিশ লাইনের বাড়িতে নিয়ে যাই। পরিবারের সদস্য বলতে বৃদ্ধা মা এবং স্ত্রী। বাড়িতে পরিচারিকা রয়েছে। আর মারধর, কালশিটে দাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ওকে সুস্থ অবস্থায় পুলিশের উপস্থিতিতে বাবার হাতে তুলে দিয়েছি। এর পরে কি হয়েছে সেটা বলতে পারব না। খারাপ অভিসন্ধি থাকলে শিশুটিকে চিকিৎসা করাতাম না। আগামী ১৪ এপ্রিল ওর স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। এসব করতাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন