ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ, অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা

ভয় দেখিয়ে এক নাবালিকাকে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে এক কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহ পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে। সোমবার রাতে ওই নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার ওই কংগ্রেস নেতার নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মালদহ থানায়। ঘটনার পরই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা ও তাঁর পরিবারের লোকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪২
Share:

ভয় দেখিয়ে এক নাবালিকাকে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে এক কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদহ পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে।

Advertisement

সোমবার রাতে ওই নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার ওই কংগ্রেস নেতার নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মালদহ থানায়। ঘটনার পরই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা ও তাঁর পরিবারের লোকেরা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিটিরই কংগ্রেসের সভাপতি। এ ছাড়া তিনি ছোটদের আঁকা শেখান ও বাড়িতেই একটি স্টুডিও চালান। কমলবাবুকে ফাঁসানো হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতারা। মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত ফেরার। তল্লাশি চলছে।’’ অস্বস্তিতে পড়ে কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছে, অভিযুক্ত দোষী হলে দল তাঁর পাশে থাকবে না।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরাতন মালদহের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে ওই ছাত্রী। তার বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি। আর মা পরিচারিকার কাজ করেন। ওই ছাত্রীটির দুই ভাই রয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকাতেই বসবাস করেন অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা। মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কের ধারে তাঁর একটি স্টুডিও রয়েছে। এলাকায় তাঁর প্রভাবও রয়েছে। এলাকায় পারিবারিক কোনও বচসা লাগলে তিনি সালিশির মাধ্যমে মীমাংসা করতেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর একটি আট বছরের মেয়েও রয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীটিকে বিনা মূল্যে আঁকা শেখাতেন অভিযুক্ত নেতা। প্রতি রবিবার করে বিকেল পাঁচটা থেকে ছবি আঁকা শেখাতেন তিনি। প্রায় দশ জন ছাত্রছাত্রী অঙ্কন শিখতে যেত। কিন্তু অন্যদের নির্দিষ্ট সময়ের পরে তিনি ছুটি দিয়ে দিলেও ওই ছাত্রীটিকে ছাড়তেন না। রবিবার করেই অভিযুক্তর স্ত্রী তাঁর মেয়েকে নাচ শেখানোর জন্য ইংরেজবাজার শহরে আসতেন। এর সুযোগ নিয়ে গত তিন মাস ধরে ওই সময়ে ছাত্রীটিকে তিনি ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, পরিবারের কাউকে বললে ছাত্রীটিকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হত। যার ভয়ে ছাত্রীটি প্রথমে পরিবারের কাউকে কিছু জানায়নি।

গত রবিবার ফের ছাত্রীটিকে ধর্ষিতা হয় বলে অভিযোগ। সোমবার বিকেলে ছাত্রীটি শারীরিক সমস্যা হলে সে পরিবারের লোকেদের পুরো কথা জানায়। তারপরেই নির্যাতিতার পরিবারের তরফে মালদহ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারপরে পুলিশ মঙ্গলবার মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ছাত্রীটির ডাক্তারি পরীক্ষা করায়। নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘মেয়ের ছবি আঁকা শেখার খুব আগ্রহ ছিল। ওই নেতা কাছেই থাকে। সে বিনা খরচে শেখাবে বললে আমরা রাজি হয়ে যাই।’’ তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু পরে মেয়ে আর যেতে চাইত না। কিন্তু ভয়ে কিছুই বলত না। আমরাই বরং বকা দিয়ে আঁকা শেখাতে পাঠাতাম। পরে জানতে পারি, মেয়ের সঙ্গে ও খারাপ কাজ করত।’’ তিনি জানান, তাঁরা থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর থেকেই ওই কংগ্রেস নেতার বাড়িতে তালা। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের রুপালি মন্ডল বলেন, ‘‘পুলিশকে তদন্ত করে দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি।’’ বিদায়ী বিধায়ক তথা মালদহের কংগ্রেস প্রার্থী ভুপেন্দ্রনাথ হালদারও বলেন, ‘‘ওই নেতা যদি দোষী হয়, তা হলে দল তাঁর পাশে থাকবে না। তবে পুলিশের উচিত পুরো বিষয়টি দেখে নিরপেক্ষ তদন্ত করা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন