থমকে: বীরপাড়ায় আটকে রয়েছে ট্রাক। নিজস্ব চিত্র
মোর্চার অবরোধে ডুয়ার্সের সঙ্গে ভুটানের যোগাযোগ প্রায় এগারো ঘণ্টা ধরে বিপর্যস্ত থাকল। বীরপাড়ার গোমটু এবং পাগলি এলাকায় ভূটানে যাওয়ার দু’টি গেট রয়েছে। এই দু’টি রাস্তাই শনিবার সকাল থেকে অবরোধ করে কয়েকশো মোর্চা সমর্থক। অবরোধ তুলতে পুলিশের অনুরোধ শোনেনি মোর্চা সমর্থকরা, পুলিশও জোর করেনি। তার ফলে সকাল ৬টা থেকে সন্ধে পর্যন্ত পণ্যবাহী এবং যাত্রীবাহী কোনও ধরনের যানবাহনই চলাচল করেনি।
বেলা যত গড়িয়েছে ট্রাকের লাইন ক্রমশ বেড়েছে। পাহাড়ের আন্দোলনকে সমতলে নামিয়ে আনতে বেশ কিছু দিন ধরেই মোর্চা নেতারা চেষ্টা চালাচ্ছিল। কোথাও প্রতিবাদ মিছিল, কোথাও থানা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করে। পুলিশ সব ক্ষেত্রেই বাধা দেয়। তবে এ দিন গুরুত্বপূর্ণ দুই রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরোধ হয়ে থাকলেও পুলিশ কেন পদক্ষেপ করল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আজ, রবিবার থেকে ডুয়ার্সে রিলে অনশনও শুরু হওয়ার কথা।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘বীরপাড়া থানা থেকে পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলেছে। যারা অবরোধ করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ এ দিন বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অবরূদ্ধ ছিল ভুটানগামী রাস্তা। মোর্চার ডুয়ার্স কমিটির মুখপাত্র কিসমত প্রধান বলেন, ‘‘পুলিশ অবরোধ তোলার জন্য কোনও জোর করেনি। আমরাই এক ঘণ্টা ছাড় দিয়ে বিকেলে অবরোধ তুলে নিয়েছি।’’
শুক্রবার গোর্খাল্যান্ডের দাবি, পুলিশের গুলিতে সমর্থকদের মৃত্যু ও পাহাড়ে পুলিশি নিপীড়নের প্রতিবাদে মোর্চার মৌন মিছিল পুলিশ আটকে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ১২ ঘন্টার পথ অবরোধ করে মোর্চার সমর্থকরা। অবরোধের ফলে এ দিন ভুটান ও সংলগ্ন কোনও চা বাগান থেকে কোনও যানবাহন বীরপাড়া আসেনি বা যায়নি। বাইক পর্যন্ত আটকে দেওয়া হয়।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, “মোর্চার বন্ধ তোলার জন্য বীরপাড়া থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু, সারা দিনে পুলিশ একবার পথ অবরোধের স্থলে গিয়ে মোর্চা সমর্থকদের দু’এক কথা জিজ্ঞাসাবাদ করেই বন্ধ তোলার কোন পদক্ষেপ না নিয়ে ফিরে আসে। ডুয়ার্স মোর্চার মিডিয়া মুখপাত্র কিসমত প্রধান বলেন, “রবিবার থেকে বীরপাড়া কলেজ রোডে মোর্চার পার্টি অফিসের সামনে পাহাড় সহ ডুয়ার্সকেও গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অনির্দিষ্ট রিলে অনশন শুরু হবে।”
কলকাতা থেকে গোমটু ভুটানে যাচ্ছিলেন এক ট্রাক চালক রামসুন্দর সাহানি। তিনি বলেন, “ফাঁকা রাস্তায় কোনও হোটেল না থাকায় সঙ্গে থাকা বিস্কুট খেয়ে দিন কাটে।’’