বৃক্ষরোপণে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
মালদহের আদিবাসী অধ্যুষিত হবিবপুর ব্লকে সরকারি অনুষ্ঠানে গিয়ে শুক্রবার একগুচ্ছ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। সে জন্য কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণাও করেন। এ ছাড়া এ দিন তিনি বিডিও অফিসেরই সভাকক্ষে সরকারি ভাবে জনসংযোগ কর্মসূচি ও পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে একাধিক প্রকল্পের উপভোক্তাদের হাতে সরকারি নানা পরিষেবা তুলে দেন।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, হবিবপুর ব্লকে কেন এত তোড়জোড়? এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদিবাসী অধ্যুষিত এই ব্লকে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। তাই কি লোকসভা নির্বাচনের আগে ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি তকমাকে কাজে লাগিয়ে আদিবাসীদের মন জয় করতে এমন উন্নয়নের উদ্যোগ? এমনটা অন্তত মনে করছেন বিরোধীরা। তবে মন্ত্রী তা মানতে চাননি। এ দিকে জেলা প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ অগস্ট হবিবপুরেই কেন্দুয়া হাইস্কুলের মাঠে সরকারি উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে আদিবাসী উত্সব। থাকার কথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীরও।
দু’দিনের মালদহ সফরের শেষ দিনে এ দিন সকালেই হবিবপুরে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। বিডিও অফিসের পুকুরপাড়ে তিনি গাছ লাগান। কেন্দপুকুর হাই স্কুলের মাঠটি খেলার উপযোগী করার জন্য যত টাকার প্রয়োজন তা দেওয়ারও আশ্বাস দেন। পরে তিনি ব্লকেরই বুলবুলচণ্ডীতে বাস স্ট্যান্ডের উদ্বোধন করেন। সেখানে মার্কেট কমপ্লেক্স ও টার্মিনাস তৈরির জন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দও ঘোষণা করেন।
প্রশ্ন, কেন এই তোড়জোড়? সূত্রেই খবর, এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হবিবপুর ব্লকের তিনটি আসনেই জিতেছে বিজেপি। হবিবপুর পঞ্চায়েত সমিতিতেও বিজেপি জিতেছে। ৩১টি আসনের মধ্যে ১৮টি আসন তারা জিতেছে। সেখানে তৃণমূল ৭টি, কংগ্রেস ৫টি ও সিপিএম একটি আসন পেয়েছে। পঞ্চায়েতে ১১টির পাঁচটিতে একক দখল নিয়েছে বিজেপি। বাকি ৬টি ত্রিশঙ্কু হলেও সেগুলিতে নির্ণায়কের জায়গায় বিজেপিই। আদিবাসী অধ্যুষিত হবিবপুর ব্লকে বিজেপির এ হেন উত্থানে দলীয় নেতৃত্ব রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছে। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। বিজেপির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবাকে সামনে রেখে তৃণমূল হবিবপুরের বাসিন্দাদের ভোলানোর চেষ্টা করছেন।’’ মন্ত্রী অবশ্য বলেন, ‘‘হবিবপুর ব্লকের উন্নয়নের স্বার্থেই এই উদ্যোগ। রাজনীতির ব্যাপার নেই।’’