বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজের হাতে লাগানো চারাগাছ কয়েক বছরে বেশ খানিকটা বেড়ে উঠেছে। চোখের সামনে যাতায়াত করছে বাংলাদেশের যানবাহন। দুই দেশের বাসিন্দারাও পরস্পরকে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। রয়েছে সীমান্তে দুই দেশের জাতীয় পতাকা তোলা ও নামানোর সাক্ষী থাকবার হাতছানিও। তাই পর্যটকদের আনাগোনাও রয়েছে। তারপরেও কোচবিহারের তিনবিঘা সীমান্ত ঘিরে পর্যটক আকর্ষণ বাড়াতে তেমন কোনও উদ্যোগ নেই। অথচ পরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে তোলা হলে তিনবিঘাও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে পঞ্জাবের ওয়াঘার মত আকর্ষণীয় হত বলে বাসিন্দাদের দাবি। তাঁদের বক্তব্য, পরিকাঠামো সাজিয়ে তোলা হলে গোটা মেখলিগঞ্জের অর্থনীতিটাই বদলে যেত।
বাংলাদেশের অঙ্গারপোতা-দহগ্রাম এলাকা পাটগ্রামের সঙ্গে তিনবিঘা করিডরের মাধ্যমে যুক্ত রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা ওই করিডর দিয়েই সেদেশের বাসিন্দারা যাতায়াত করতে পারেন। যানবাহনও চলে। দুদিকেই পাহারায় রয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড ও বিএসএফের জওয়ানরা। প্রতিদিন নিয়ম করে দুই দেশের জাতীয় পতাকা তোলা ও নামানো হয়। এসব দেখার টানে আগ্রহী বাসিন্দারা অনেকেই সেখানে ভিড় করেন। কিন্তু এতদিনেও সেখানে রেস্তোঁরা, রাত্রিবাসের পরিকাঠামো কিছুই হয়নি। যাতায়াতের বাসের সংখ্যাও হাতেগোনা। কয়েক বছর আগে একটি উদ্যান তৈরি করা হলেও সেটিও প্রায় বেহাল হয়ে পড়েছে। মেখলিগঞ্জের বিডিও বীরূপাক্ষ মৈত্র বলেন, “তিনবিঘাকে সাজিয়ে তোলার ব্যাপারে বেশ কিছু প্রস্তাব বিএসএফ কর্তাদের দেওয়া হয়েছে।’’ কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথনের বক্তব্য, “ওই ব্যাপারে বিএসএফকে এগিয়ে আসতে হবে।” বিএসএফের এক কর্তা জানিয়েছেন, স্থানীয় স্তরে এ নিয়ে তাঁদের কিছু করার ব্যাপার নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
২০১১ সালের ১১ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনবিঘায় এসেছিলেন। সে সময় তিনি সেখানে গাছের চারা লাগান।
মেখলিগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক পরেশ অধিকারী বলেন, “বাম আমলে তিনবিঘাকে সাজিয়ে তোলার ব্যাপারে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছিল। টাকার সমস্যার রাত্রিবাসের পরিকাঠামোর মত কিছু কাজ করা যায়নি। এখন কেন সেটা হচ্ছে না জানি না।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, “সীমান্তের অত কাছাকাছি এলাকায় পর্যটকদের রাত্রিবাসের ব্যবস্থা করার আইনি কিছু জটিলতা রয়েছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, খানিকটা দূরে আইনি জটিলতা এড়িয়ে কোনও পরিকাঠামো করা যায় কি না, তা কতটা ফলপ্রসূ হবে সে সব খতিয়ে দেখে বিষয়টি ভাবা হবে।