শৌচাগার দেখভালে আপত্তি স্নাতক মহিলাদের

পুরসভা থেকে ছাঁটাই হওয়া শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের (এসএসকে) চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মীদের মিশন নির্মলবাংলা প্রকল্পে নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হল।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুরসভা থেকে ছাঁটাই হওয়া শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের (এসএসকে) চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মীদের মিশন নির্মলবাংলা প্রকল্পে নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হল।

Advertisement

বালুরঘাট শহরে পুরসভার উদ্যোগে সম্প্রতি ৪৭টি ‘সামাজিক শৌচালয়’ তৈরি করা হয়েছে। ওই শৌচালয়ের দেখভালের জন্য এসএসকে-র ছাটাই হওয়া ওই কর্মীদের নিয়োগ করা হবে বলে তাঁদের প্রস্তাব (অফার লেটার) দেওয়া হয়। পুরপ্রশাসকের ওই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাঁটাই হওয়া কয়েকজন মহিলা। ওই মহিলারা স্নাতক। বিএ পাশ করে শৌচালয় রক্ষণাবেক্ষণের কাজে আপত্তি জানিয়েছেন তাঁরা। দু’দিন আগে বালুরঘাটে কৃষিমেলা প্রাঙ্গণে তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সহ সভাপতি বিপ্লব মিত্রকে ধরে এক স্নাতক মহিলা প্রশ্ন করেন, বিএ পাশ করে কি শৌচালয়ের কাজ করতে হবে? বেতন সামান্য হলেও কেন তাঁরা সম্মানজনক কাজ পাবেন না, প্রশ্ন তুলেছেন সুপারভাইজারের কাজ হারানো ওই মহিলা।

বালুরঘাট পুরসভার বিদায়ী তৃণমূল বোর্ড প্রায় ৫০ জন মহিলাকে শহরের এসএসকে কেন্দ্রগুলির মিড-ডে মিল দেখভালের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করেছিল। এঁদের মধ্যে অনেকেই বিএ পাশ। সরকার থেকে প্রাপ্ত মিড-ডে মিলের আর্থিক বরাদ্দের সুদের টাকা থেকে মাসিক দু’হাজার টাকা বেতনের চুক্তিতে ৫০ জন সুপারভাইজারকে নিয়োগ করা হয়। সেই সময়ে ক্ষমতাসীন তৃণমূল বোর্ড বিওসি-র সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Advertisement

তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভার বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয় গত ২৩ অক্টোবর। পুরসভায় বসে প্রশাসক। তার পরেই ওই কর্মীদের ছাঁটাই করা হয়। মিড-ডে মিল প্রকল্পের সুদের টাকায় বেতনের চুক্তিতে কর্মী নিয়োগ করা যায় না, সুদের টাকা সরকারি তহবিলে ফেরত দিতে হয় বলে পুরপ্রশাসক নভেম্বরে তাদের ছাঁটাই করেন। এ দিকে, ওই কর্মীদের ছাঁটাই করা যাবে না বলে তৃণমূলের পুর শ্রমিক কর্মী ইউনিয়ন থেকে দাবি করে প্রশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

এর পরেই পুরপ্রশাসকের তরফে নাগরিক ও পথচারীদের জন্য তৈরি বালুরঘাটের ওই শৌচালয় পিছু এক ও দু’জন করে ওই ছাঁটাই কর্মীদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁদের অফার লেটারও দেওয়া হয় বলে পুরপ্রশাসক তথা মহকুমাশাসক ঈশা মুখোপাধ্যায় জানান। তিনি বলেন, ‘‘মিড-ডে মিলের সুদের টাকায় সুপারভাইজার বলে কর্মী নিয়োগ করা যায় না। ফলে কাজ হারান তাঁরা। ওই কর্মীদের মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের অধীন কাজে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। এ নিয়ে তাঁদের আপত্তি থাকলে কিছু করার নেই।’’

তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘স্নাতক পাশ মহিলারা শৌচালয় রক্ষণাবেক্ষণ করবেন, মানা যায় না। এক স্নাতক মহিলা এ ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন।’’ বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন