কাজ বন্ধের নির্দেশ গ্রিন বেঞ্চের

দিও জেলা প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারের সূত্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, গত ৯ অক্টোবর শুধু সুভাষবাবুর এক তরফা অভিযোগ শুনেই গ্রিন বেঞ্চ রায় দিয়েছেন। রাজ্যের তরফে হলফনামা দেওয়া হবে, তাতেই গ্রিন বেঞ্চ বাস্তব অবস্থা জানতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৩১
Share:

গ্রিন ট্রাইবুন্যাল জানতে চেয়েছে, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে পদক্ষেপ করা হবে না? ফাইল চিত্র।

গজলডোবায় মেগা পর্যটন প্রকল্পে হেলিপ্যাড সহ আপাতত সব রকম নির্মাণ বন্ধ রাখতে জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুন্যাল নির্দেশ দিয়েছে, দাবি পরিবেশকর্মীদের। গজলডোবা প্রকল্প নিয়ে ২০১৬ সালে দেওয়া ট্রাইবুন্যালের নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলে গত অগস্ট মাসে অভিযোগ জানিয়েছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। গত ৯ অক্টোবর ট্রাইবুন্যালের প্রিন্সিপাল বেঞ্চ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের পর্যটন, বন এবং নগর উন্নয়ন দফতরের সংশ্লিষ্ট অফিসারদের কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে। গ্রিন ট্রাইবুন্যাল জানতে চেয়েছে, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে পদক্ষেপ করা হবে না? গজলডোবা নিয়ে ট্রাইবুনালের আগের নির্দেশ ভঙ্গ করাতেই এই নোটিস বলে দাবি করেছেন সুভাষবাবু। যদিও জেলা প্রশাসন এবং রাজ্য সরকারের সূত্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, গত ৯ অক্টোবর শুধু সুভাষবাবুর এক তরফা অভিযোগ শুনেই গ্রিন বেঞ্চ রায় দিয়েছেন। রাজ্যের তরফে হলফনামা দেওয়া হবে, তাতেই গ্রিন বেঞ্চ বাস্তব অবস্থা জানতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প গজলডোবায় মেগা পর্যটন হাব নিয়ে আগে সুভাষবাবুই মামলা করেছিলেন। ২০১৬ সালে অগস্টে গ্রিন ট্রাইবুন্যাল নির্দেশ দিয়েছিল, পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া গজলডোবায় কোনও নির্মাণ কাজ করা যাবে না। এরপরে পরিবেশের ছাড়পত্র সহ নানা কারণে গজলডোবায় পর্যটন প্রকল্পের কাজ শুরু হতে দেরি হয়। কেন কাজ শুরু হচ্ছে না, তা নিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী সরকারি সভায় বেশ কয়েকবার মন্ত্রী-আমলাদের বকাঝকা করেন। শেষে ২০১৮ সালে সরকারি কটেজ ‘ভোরের আলো’র উদ্বোধন হয়। পুরো প্রকল্পটির নামই ‘ভোরের আলো’ রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্য সরকারের তরফে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবই প্রকল্পের তদারকি করছেন। তিনি বলেন, “সুভাষবাবু বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। আমাদের সরকার গ্রিন বেঞ্চে যথা সময়ে হলফনামা জমা দেবেন। পরিবেশ সংক্রান্ত সব ছাড়পত্র আমাদের রয়েছে।”
গত অগস্ট মাসে সুভাষবাবু ফের ট্রাইবুন্যালে নালিশ ঠুকে জানান, গজলডোবায় পক্ষিবিতান নাম দিয়ে পাখিদের জন্য একটি অভয়ারণ্য রাজ্য সরকারই ঘোষণা করেছে। সেই অভয়ারণ্যের মধ্যেই হেলিপ্যাড এবং মেগা পর্যটন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলছে বলে অভিযোগ করেন। পর্যটন প্রকল্পের জন্য যথাযথ ছাড়পত্রও সরকারের নেই বলে দাবি করেন তিনি। ট্রাইবুন্যালের আগের নির্দেশও যে মানা হচ্ছে না, সে কথাও জানানো হয়। তার প্রেক্ষিতেই বিচারপতি এস পি ওয়াদি এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য এস এস গাবরিয়ালের বেঞ্চ গত ৯ অক্টোবর গজলডোবা নিয়ে নির্দেশ জারি করেছেন।

Advertisement

সুভাষবাবু বলেন, “হেলিপ্যাড সহ আপাতত সব নির্মাণ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে গ্রিন বেঞ্চ। যেখানে পাখিদের ওড়ার কথা, সেখানে হেলিকপ্টার উড়তে পারে না। পাখিরালয়ের মধ্যেই নির্মাণ হচ্ছে, এটা পরিবেশ আইনের পরিপন্থী।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন