বাসি বিয়ের আসরে আচমকা অচেতন হয়ে পড়েছিলেন পাত্র। ওই ঘটনার জেরে পাত্রের মৃগীরোগ রয়েছে বলে দাবি করে বিয়ে ভণ্ডুল করে দিল পাত্রীপক্ষ। এরপর যৌতুক, পণের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিয়ের আয়োজনের খরচ মেটানোর দাবিতে পাত্র ও তাঁর মাকে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে রাখার অভিযোগ উঠল পাত্রীপক্ষের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার রায়গঞ্জের পূর্ব সুদর্শনপুর লাগোয়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। বিকাল সাড়ে ৫টা নাগাদ পুলিশ পাত্রীর বাড়িতে গিয়ে পাত্র ও তাঁর মাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। ওই ঘটনায় অবশ্য কোনওপক্ষই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেনি।
গত রবিবার রাতে রায়গঞ্জেরই বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে হয়। পাত্রীপক্ষের দাবি, পাত্রপক্ষের দাবি মেনে পাত্রকে যৌতুক হিসেবে বিভিন্ন আসবাবপত্র ও ২০ হাজার টাকা পণ দেন তাঁরা। বিয়ের আয়োজন করতে তাঁদের ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সোমবার দুপুরে বাসি বিয়ের আসরে পাত্র আচমকা অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যান। দুই পরিবারের লোকজন এরপর তাঁর চোখে ও মুখে জল ছেটালে ২০ মিনিট পর সুস্থ হন তিনি।
পাত্রীর বাবার দাবি, ‘‘বাসি বিয়ের আসরে পাত্র আচমকা খিঁচুনি দিয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে ছটফট করতে করতে অচেতন হয়ে পড়ে। তখনই বুঝি ওর মৃগীরোগ রয়েছে! পাত্রপক্ষ যৌতুক ও পনের লোভে পাত্রের রোগ গোপন করেছিল। তাই মেয়ের জীবন বাঁচাতে আমরা বিয়ে ভণ্ডুল করেছি।’’
পাত্রের বাবার পাল্টা দাবি, বিয়ের দিন উপোস থাকার কারণে পাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। পাত্রের অভিযোগ, ‘‘পাত্রীপক্ষ বিয়ে ভণ্ডুল করে সোমবার দুপুর থেকে তাঁকে ও তাঁর মাকে যৌতুক ও পণের টাকা ফেরত এবং বিয়ের খরচ বাবদ ৮০ হাজার টাকা মেটানোর দাবিতে বাড়িতে আটকে রেখে গালিগালাজ ও ধাক্কাধাক্কি করে।’’ তাঁর দাবি, এদিন পাত্রীপক্ষকে যৌতুক ও পণের সমস্ত টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। তবে তাঁদের পক্ষে বিয়ের খরচ মেটানো সম্ভব নয়।
পেশায় ভ্যানচালক পাত্রীর বাবার পাল্টা দাবি, ‘‘ধারদেনা করে মেয়ের বিয়ের সমস্ত খরচ জোগাড় করেছিলাম। মেয়ের যখন বিয়েই হল না, তখন সেই টাকা পাত্রপক্ষকেই দিতে হবে।’’