লাঠি ভোজালি নিয়ে লড়াই ২ গোষ্ঠীর

ভোটের মুখে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে রক্তাক্ত হল দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন। বুধবার রাতে তপন থানার রামপাড়াচেঁচরা মোড়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। লাঠি, ভোজালি নিয়ে গোলমালে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষই। সংঘর্ষে ৩ জন গুরুতর জখম হন। তাদের গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে রাতেই মালদহের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

Advertisement

অনুপরতন মোহন্ত

তপন শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৬ ০৩:০৯
Share:

ঘটনার পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল গঙ্গারামপুরে।

ভোটের মুখে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে রক্তাক্ত হল দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন।

Advertisement

বুধবার রাতে তপন থানার রামপাড়াচেঁচরা মোড়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। লাঠি, ভোজালি নিয়ে গোলমালে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষই। সংঘর্ষে ৩ জন গুরুতর জখম হন। তাদের গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে রাতেই মালদহের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তিনজনের মধ্যে বাজিতপুর হাইস্কুলের শিক্ষক নজরুল ইসলাম এখনও চিকিৎসাধীন। জখম অন্য দুই ব্যক্তি, আনিসুর রহমান ও মইদুল মিঁয়াকে বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এই ঘটনায় তৃণমূলের প্রাক্তণ জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র অনুগামী নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল প্রার্থী সত্যেন রায়। পাল্টা অভিযোগে সরব হয়েছেন নুরুল ইসলামও।

হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে জখম শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা বিপ্লব মিত্রের অনুগামী। এই অপরাধে আমাদের উপর বিনা প্ররোচনায় হামলা চালায় সত্যেন রায় অনুগামীরা।’’ এলাকার বিদায়ী বিধায়ক তথা তৃণমূল প্রার্থী সত্যেনবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিপ্লববাবুর অনুগামী তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিনা প্ররোচনায় সশস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল প্রার্থী সত্যেন রায়। তাঁর কথায়, ‘‘আমার অনুগামীরা গোলমাল করেছে বলে জানি না। কিছুদিন ধরে কিছু মানুষ পাড়ায় পাড়ায় গণ্ডগোল করছে। বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। ভোটের মুখে এটা ঠিক হচ্ছে না।’’

আহত তৃণমূল কর্মী নজরুল ইসলাম।

নুরুল ইসলামের পাল্টা অভিযোগ, সত্যেন রায় ঘনিষ্ঠ নন্দনপুর অঞ্চল সভাপতি মজিরুদ্দিন মন্ডলের নেতৃত্বে তাঁদের কর্মী সমর্থকের উপর হামলা হয়েছে। রামপাড়া মোড়ে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় ১৫-১৬ জনের একটি দল বাইকে করে এসে হামলা চালায়। শূন্যে অন্তত ১০ রাউন্ড গুলিও ছোড়ে তারা। এ দিন বিকেলে তপন থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন নুরুল ইসলামরা।

তপন থানার অধীন রামপাড়া মোড়ে সংঘর্ষ হলেও হামলাকারী ও আক্রান্তরা সকলেই লাগোয়া গঙ্গারামপুর থানায় নন্দনপুর অঞ্চলের বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কয়েক মাস আগেই রামপাড়া চেঁচড়া অঞ্চলের তৃণমূলের উপপ্রধান তথা বিপ্লব মিত্র অনুগামী লুৎফর রহমান খুন হন। এই ঘটনায় সত্যেনবাবুর নাম জড়িয়ে, বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর তৃণমূল কর্মীরা থানা পুলিশের পর উচ্চ আদালতেরও দ্বারস্থ হন। তা নিয়ে দু’পক্ষের বিবাদ অব্যাহত। বুধবার রাতে ফের সংঘর্ষ বাধে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলে যোগ দেওয়া কিছু নব্য সমর্থকদের নিয়ে পুরনো তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা করা হচ্ছে। উল্টে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হামলার অভিযোগ করা হচ্ছে। পুলিশও ওদের কথা শুনে আমাদের লোকজনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে।’’ এলাকার বিদায়ী বিধায়ক সত্যেন রায়ের নাম না করে বিপ্লববাবুর আরও অভিযোগ, ‘‘নব্য তৃণমূলদের মদত দিয়ে পুরনোদের উপর হামলা করে আসলে দলটারই সর্বনাশ হচ্ছে।’’ আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি তথা তৃণমূলের নন্দনপুর অঞ্চল সভাপতি মজিরুদ্দিন মন্ডল ঘটনায় নাম জড়ানোর পর জানান, তিনি স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য গত দু’দিন ধরে শিলিগুড়িতে রয়েছেন। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা হামলার অভিযোগ করা হয়েছে।

ছবি: অমিত মোহান্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন