রেল চালুর পর এক যুগ পার হতে চলেছে। অথচ দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট স্টেশনে এখনও যাত্রী নিরাপত্তার উপযুক্ত ব্যবস্থা হয়নি বলে অভিযোগ। জিআরপি থানা তৈরির কথা ঘোষণা করা হলেও তা কার্যত কাগজ-কলমে রয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় থানার পুলিশের উপর ভরসা করেই চলছে রেলের যাবতীয় নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রেলের এক অফিসারের অবশ্য দাবি, স্টেশন চত্বরের একটি ঘরেই রেলপুলিশের কয়েকজন কর্মী থাকেন। তারা নজরদারি চালান। যদিও, এই দাবির সঙ্গে বাস্তবের অনেকটাই ফারাক। মালদহ থেকে ট্রেনে চেপে দু একজন রেল পুলিশ এবং আরপিএফ কর্মী বালুরঘাট ট্রেশনে আসেন আবার ট্রেন ধরেই তারা ফিরে যান বলে অভিযোগ।
২০০৪ সালে রেলের মানচিত্রে ঠাঁই হয় বালুরঘাটের। তারপর থেকে এক দুটি করে বালুরঘাট-একলাখি পথে সকাল ও সন্ধ্যে মিলিয়ে ৫টি ট্রেন চলাচল করলেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা তলানিতেই। তার জেরেই চলন্ত ট্রেন থেকে যাত্রীদের গলার হার ও ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়মিত হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এবারে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা কামরার মধ্যে এক কিশোরীর শ্লীলতাহানির ঘটনায়, বিপদ যে মাত্রা ছড়াচ্ছে, তা টের পেয়ে সাধারণ যাত্রী থেকে বাসিন্দারা আতঙ্কিত। জেলার পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘পরিকাঠামো পেলে স্টেশনে রেল পুলিশের পূর্ণাঙ্গ থানা তৈরি হবে।’’
এ বিষয়ে এদিন জানতে চাইলে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব বলেন, ‘‘ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলব।’’
বালুরঘাট স্টেশনে কেবল নিরাপত্তা ব্যবস্থাই নয়, সুষ্ঠু পানীয় জল ও আলোর ব্যবস্থা নেই। মূল রাজ্য সড়ক থেকে স্টেশনে পৌঁছনোর একমাত্র পাকা রাস্তাটিও দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। মাস তিনেক আগে বালুরঘাট স্টেশন পরিদর্শনে এসে ডিআরএম অরুণ শর্মা ওই বিষয়গুলি নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে ছিলেন। সেসময় তিনি জানিয়েছিলেন, বালুরঘাট-একলাখি রেলস্টেশনে প্রস্তাবিত জিআরপি থানা সহ উন্নয়ন প্রকল্পগুলি রূপায়ণে অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় কাজ করা যায়নি। গত বাজেটে অর্থ বরাদ্দের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে ডিআরএম দাবি করে গেলেও কাজের কাজ যে কিছু হয়নি, তা ভুক্তভোগী জেলাবাসী প্রতিদিনই টের পাচ্ছেন।