হরকাবাহাদুর ছেত্রী।
কালিম্পংয়ে সভা করার অনুমতি পেলেন না হরকা বাহাদুর ছেত্রী। তাই রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জন আন্দোলন পার্টির (জাপ) সভাপতি। রবিবার ছিল জাপের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই উপলক্ষে কালিম্পংয়ের ত্রিকোণ পার্কে সভার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন দলের নেতারা। প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় সভা বাতিল করেছে জাপ। তার বদলে এ দিন দলের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে পদযাত্রা। ক্ষুব্ধ হরকার অভিযোগ, ‘‘রাজনৈতিক কারণেই আমাদের সভা করতে দেওয়া হল না। সভা হলে যারা পাহাড়ের মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে, যারা রাজ্যের সরকারি দলের সঙ্গে আছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা বলতাম। সত্যি ঘটনা তুলে ধরতাম। এটা আন্দাজ করতে পেরেই উপর মহলের নির্দেশে সভার অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’ সভা করতে না দিয়ে তাঁদের মুখ বন্ধ করা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হরকা।
জাপের সভার অনুমতি প্রসঙ্গে জিটিএ-র তত্ত্ববধায়ক চেয়ারম্যান বিনয় তামাং বলেন, ‘‘ওটা প্রশাসনিক ব্যাপার। প্রশাসনই ওই বিষয়ে যা বলার বলবে।’’ জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘রবিবার খাদ্য দফতরের পরীক্ষাকেন্দ্র গুলিতে প্রচুর পুলিশ কর্মী নিয়োগ করতে হয়। তাই সভার অনুমতি দেওয়া যায়নি।’’
এ দিন ডেলো হিল থেকে দূরবীন পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার পদযাত্রা করেন জাপের নেতা-কর্মীরা। দলের নেতা অমর লামা জানিয়েছেন, লোকসভা ভোটের আগে পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স জুড়ে তাঁদের পদযাত্রা পর্যায়ক্রমে চলবে। দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মিরিক, গরুবাথান, শিলিগুড়ি সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় পদযাত্রার পর সভাও করবেন তাঁরা।
লোকসভা ভোটে তাঁদের অবস্থানের কথা এ দিন স্পষ্ট করেছেন হরকা। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচনী লড়াইয়ে তৃণমূল ও বিজেপি থেকে সম দূরত্ব বজায় রাখবে জাপ। হরকা বলেন, ‘‘বিনয়পন্থী মোর্চা এবং জিএনএলএফ তৃণমূলের সঙ্গেই আছে, এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। তাই ওই দুই দলের সঙ্গেও আমরা কোনও সমঝোতায় যাচ্ছি না। পাহাড়ের অন্য দলগুলোকে নিয়ে জোট তৈরির জন্য আলোচনা চলছে।’’ তবে জোট হলে তিনি প্রার্থী হবেন কি না, তা কিন্তু খোলসা করেননি তিনি।
বিমল গুরুং, রোশন গিরিদের আত্মগোপনের পরে দার্জিলিংয়ে যে ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছেন তামাং, কালিম্পংয়ে তেমনটা হয়নি বলে মানছেন মোর্চার অনেক নেতাই। বিমলের সঙ্গ ছেড়ে জাপ গঠনের পরে কালিম্পংকে আলাদা জেলা করার দাবিতে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেন হরকা। সেই আন্দোলনের সাফল্য এসেছে। এই পরিস্থিতিতে হরকার ঘোষণা পাহাড়ের রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।