হরকাবাহাদুর ছেত্রী।
আগামী ২৭ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবস। স্বাভাবিক ভাবেই হরকাবাহাদুর ছেত্রী চেয়েছিলেন, জন আন্দোলন পার্টি বা জাপের সেই অনুষ্ঠান হোক তাঁর খাসতালুক কালিম্পঙে। কিন্তু কালিম্পং শহর তো দূর, গোটা জেলায় কোথাও অনুষ্ঠানের অনুমতি পেলেন না হরকা। শেষ অবধি প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপন সমতলে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। ঠিক হয়েছে, ওই দিনই শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কে অনুষ্ঠান করা হবে। তবে শেষ অবধি পুলিশ-প্রশাসন সভার অনুমতি দেব কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
এই ঘটনার জন্য প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন হরকা। তিনি বলেন, ‘‘সরকার-প্রশাসন কালিম্পঙে আমাদের ভয় পাচ্ছে। মেলা গ্রাউন্ডে একটি জমায়েত ও সভা করতে চেয়েছিলাম। তার অনুমতি দেওয়া হল না।’’ তবে তাঁরা জোরাজুরির রাস্তায় না গিয়ে যে সমতলে কর্মসূচি নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তা-ও জানিয়ে দিলেন।
কিন্তু কেন অনুমতি দিল না প্রশাসন? হরকার দাবি, ‘‘বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপারা অন্যত্র যা-ই করুন, কালিম্পঙে খুব একটা জমি দখল করতে পারেননি। তিস্তা-রঙ্গিত উৎসবের ফাঁকা চেয়ার দেখেই তা বোঝা গিয়েছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘তাই পুলিশ-প্রশাসন এই ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। আইনশৃঙ্খলার কথা বলে অনুমতি দিচ্ছে না।’’ তবে হরকার বিশ্বাস, কালিম্পঙের মানুষ তাঁদের সঙ্গেই আছে। তাঁর দাবি, ‘‘সভা হলে যে ক’জন মোর্চার সঙ্গে আছেন, তা-ও থাকবেন না।’’
বিমল গুরুঙ্গের একসময়কার সঙ্গী হরকা ২০১৬ সালের বিধানসভার আগে নিজের দল গড়েন। অমর লামা, নয়ন প্রধানের মতো জেলার একাধিক প্রাক্তন মোর্চা নেতা জাপ শিবিরে যোগ দেন। ভোটে লড়ে কালিম্পঙের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের অস্তিত্বেরও জানান দেন। গত জুনে অনির্দিষ্টকালের বন্ধ শুরুর পরে গুরুঙ্গের তৈরি সর্বদল কমিটিতে জাপ ছিল। পরে বিভিন্ন কারণে রাজ্যের সঙ্গে তাদের দূরত্ব বাড়ে। শেষ অবধি জিএনএলএফের মন ঘিসিঙ্গদের নিয়ে নতুন একটি কমিটি তৈরি হলেও হরকার সঙ্গে সেই দূরত্ব রয়েই গিয়েছে। দলের একটি অংশের দাবি, কালিম্পঙে তাঁদের সভা করতে না দেওয়ার সেটাই বড় কারণ। যদিও এই প্রসঙ্গে কালিম্পঙের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
কিন্তু শিলিগুড়িতে কি অনুমতি দেওয়া হবে? শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনই কিছু বলতে পারছি না।’’