মালতীপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুর

জোট হওয়ার আগেই কাজিয়া

জোট হলেও মালদহের মালতীপুর এবং হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আসন ছাড়বে না কংগ্রেস। শনিবার দুপুরে কৌতুয়ালি ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নূর। এমনকি ওই দুই আসনে প্রয়োজনে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ০১:৩৬
Share:

জোট হলেও মালদহের মালতীপুর এবং হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আসন ছাড়বে না কংগ্রেস। শনিবার দুপুরে কৌতুয়ালি ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নূর। এমনকি ওই দুই আসনে প্রয়োজনে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি গুজব ছড়িয়েছে আমরা মালতীপুর এবং হরিশ্চন্দ্রপুরের আসনটি ছেড়ে দিচ্ছি। তাই তড়িঘড়ি এদিন সাংবাদিক বৈঠক ডাকতে বাধ্য হয়েছি। আমরা কোনও মতে ওই দু’টি আসন ছাড়ব না। ওই দুই আসনে গত লোকসভা এবং পঞ্চায়েতে ভালো ফল করেছি। স্থানীয় নেতা কর্মীদের দাবি মেনে আমরা ওই দুই আসনে লড়াই করব।’’ তিনি জানান, এখানে প্রয়োজন হলে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইও করবেন তাঁরা।

এদিকে, মালতীপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুরের আসনটি ছাড়তে নারাজ আরএসপি ও ফরোর্য়াড ব্লক নেতৃত্ব। ফলে ওই দুই আসন নিয়ে কংগ্রেস এবং বামেদের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে। জেলাতে বাম কংগ্রেসের জোট ওই দুই আসনে ধাক্কা খেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আরএসপির জেলা সম্পাদক গৌতম গুপ্ত বলেন, ‘‘মালতীপুরের বিধায়ক আমাদের দলেরই রয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে আমরা কংগ্রেস তৃণমূলের জোটকে হারিয়েছিলাম। তাই ওই আসনটি আমাদের ছাড়ার কোন প্রশ্নই উঠছে না। ওই আসনে আমরা লড়ছি তা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছে ২লক্ষ ১৩ হাজার ৪৪১ জন। গতবার ওই বিধানসভা কেন্দ্রে ফরোর্য়াড ব্লকের প্রার্থী তাজমূল হোসেন জয়ী হয়েছিলেন। তিনি পেয়েছিলেন ৬ লক্ষ ২ হাজার ১৯টি ভোট। আর ৫ লক্ষ ৯ হাজার ৫৭৮ টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন কংগ্রেসের মোস্তাক আলাম। যদিও মাস চারেক আগে ফরোয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন বিধায়ক তাজমূল হোসেন।

মালতীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে গত বার আরএসপির বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি পেয়েছিলেন ৫ লক্ষ ৪ হাজার ৭৯৪টি ভোট। ৪ লক্ষ ৮ হাজার ৯৩টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন কংগ্রেসের প্রার্থী আলবেরুণী শেখ। লোকসভা নির্বাচনে হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস ১১ হাজার এবং মালতীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ৩৬ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল কংগ্রেস। ফলে মালতীপুর এবং হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী দেওয়ার জোরালো দাবি তুলেছেন স্থানীয় নেতৃত্ব। সম্প্রতি হরিশ্চন্দ্রপুরে নির্বাচনী সভায় কংগ্রেসের তরফ থেকে সম্ভ্রাব্য প্রার্থী হিসেবে মোস্তাক আলমের নাম ঘোষণা করে দেন জেলা নেতৃত্ব। ঘোষণার পরেই বাম এবং কংগ্রেসের মধ্যে দ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়ছিল। এ দিন জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নূর ওই দুই আসন ছাড়া হবে না বলে ঘোষণা করতেই আরএসপি এবং ফরোয়ার্ড ব্লকের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পরে।

এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ মালতীপুর এবং হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা জড়ো হন কোতুয়ালি ভবনে। সেখানে জেলা সভানেত্রী মৌসমকে ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। তারপরেই সাংবাদিক বৈঠক করে মালতীপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুর ছাড়া হবে না বলে পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দেন মৌসম।

অন্যদিকে ফরোর্য়াড ব্লকের জেলা সম্পাদক সীমান্ত মৈত্র বলেন, ‘‘হরিশ্চন্দ্রপুরের আসন আমরা ছাড়ব না। বরাবরই এই বিধানসভা কেন্দ্রে আমাদের দল জয়ী হয়েছে। বিধায়ক গিয়েছেন অন্য দলে। তবে আমাদের সমর্থকেরা কেউ যাননি। ওই আসন অন্য দলকে ছাড়ার কোন প্রশ্নই উঠছে না। আমরাই এখানে লড়াই করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন