বৃষ্টি না থামায় পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল

লাগাতার মুষলধারে বৃষ্টি থামছেই না। তারই জেরে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলের জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০২:৩৩
Share:

১) রোহিণীতে ধস, ২) জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়ার ত্রাণ শিবিরে, ৩) ফুলহারের জলে প্লাবিত রতুয়া, ৪) ডুডুয়ার জলে ভেসেছে ঝাড়শলাবাড়ি, ৫) আলিপুরদুয়ারের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে জল ভেঙে যাত্রা, ৬) পরিদর্শনে গীতালদহে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। — রবিন রাই, সন্দীপ পাল, বাপি মজুমদার, রাজকুমার মোদক, নারায়ণ দে ও হিমাংশুরঞ্জন দেব

লাগাতার মুষলধারে বৃষ্টি থামছেই না। তারই জেরে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলের জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

Advertisement

পাহাড়ে রাস্তা ধসে দার্জিলিং যাতায়াত ক্রমশ কঠিন হচ্ছে। বিপজ্জনক হয়ে যাওয়ায় সোমবার থেকে রোহিণীর রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। আপাতত সারানো না হওয়া অবদি পাঙ্খাবাড়ি কিংবা মিরিক হয়েই দার্জিলিং যাতায়াত করতে হবে। কালিম্পঙের রাস্তায় বেশ কয়েকটি এলাকায় ছোট মাপের ধস নামায় যাতায়াতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ দিনই জলপাইগুড়িতে পাঙ্গায় নদীর জলে তলিয়ে গিয়েছে এক যুবক৷ বিহারের বাসিন্দা সমীর দাস (২০) নামের ওই যুবক দিন কয়েক আগে পাঙ্গায় মামার বাড়িতে এসেছিলেন৷

সমতলের পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। ১৯৯৩ সালের বন্যার আতঙ্কে কয়েক হাজার বাসিন্দা দিনভর দাড়িয়ে থাকেন আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া কালজানি নদীর বাঁধে। আলিপুরদুয়ারের জেলা শাসক দেবীপ্রসাদ করণম বলেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছেন আধিকারিকেরা।’’ এলাকার বাসিন্দা অনিল বনিক, মীরা কুণ্ডুরা জানান, পানীয় জলের সমস্যা হচ্ছে। কালচিনি ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় নদীর জলবাড়ায় সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। রায়মাটাং নদীর জলবাড়ায় রায়মাটাং পাহাড়ের বাসিন্দার জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানা ও বালা নদীতে জল বাড়ায় সমস্যায় পড়েছেন সেন্ট্রাল ডুয়ার্স ও জয়ন্তীর বাসিন্দারা।

Advertisement

জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি, বানারহাট ময়নাগুড়ির পরিস্থিতি এখনও খারাপ৷ তবে মালবাজার বা রাজগঞ্জ এলাকায় নতুন করে কোনও এলাকা প্লাবিত না হলেও বহু মানুষ এখনো জলবন্দি৷ জেলা জুড়েই ত্রাণ দেওয়ার কাজ চলছে৷ মালদহে বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে ফুলহার। এখনও জলবন্দি হয়ে রয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার ১৬টি এলাকার বাসিন্দারা।

ডুয়ার্সের নাগরাকাটার ডায়না নদীতে আংরাভাসা ১ নম্বর গ্রামে খয়েরকাটা এলাকায় বাঁধ ভাঙার ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ৭০মিটার বাঁধ ভেঙেছে এখানে। বাঁধ আরও ভাঙলে নদী গ্রামে ঢুকে পড়তে পারে বলে আশঙ্কায় রয়েছেন গ্রামবাসীরা। চেংমারির ১৫০টি পরিবার জলবন্দি থাকলেও তাদের ত্রাণের ব্যবস্থা হয়নি বলে অভিযোগ করে বিজেপি। নিয়মিত এলাকায় নজরদারি চলছে বলে জানিয়েছেন মালবাজারের বিডিও ভূষণ শেরপা।

জলপাইগুড়িতে করলার জল উপচে পড়ায় রবিবার সকালেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল দিনবাজার ৷ সন্ধ্যার পর জলমগ্ন হয় জলপাইগুড়ি হাসপাতাল চত্বর থেকে শুরু করে বয়েলখানা বাজার, রায়কতপাড়া, টিবি হাসপাতাল পাড়া, মাসকালাইবাড়ি, পুরসভার ১ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা। জলমগ্ন হয়ে পড়ে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র ৷ কেন্দ্রটির নিলাম হলে এক হাঁটু জল জমে যায় ৷ টিনফুটো করে জল গড়িয়ে আসায় অনেক জায়গায় সিলিং-ও ভেঙে গিয়েছে ৷ নিলাম কেন্দ্রের কর্মী প্রতাপ রাউত বলেন, ‘‘জল জমার জেরে কেন্দ্রের সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷’’ টিন ফুটো হয়ে যেভাবে জল ভেতরে গড়িয়ে পড়ছে তাতে করে যে কোনও মুহূর্তে শর্ট-সার্কিট হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন