জলমগ্ন: রায়গঞ্জের বীরনগরের রাস্তায় জমা জল। নিজস্ব চিত্র
পুজো-মহরম মোটামুটি বৃষ্টিহীন কাটলেও সোমবার রাত থেকে বৃষ্টি চলছেই উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতলের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
কারণ, বঙ্গোপসাগরে তৈরি ঘূর্ণাবর্ত ঝাড়খণ্ড থেকে খানিকটা সরে উত্তরবঙ্গের আকাশে ঢুকে পড়েছে। ফলে, আগামীকাল, বুধবার পর্যন্ত উত্তরের আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন। উত্তরবঙ্গের আবহাওয়াবিদ সুবীর সরকার জানান, ঝাড়খণ্ড থেকে ঢুকে পড়া ঘূর্ণাবর্ত ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে মিলিয়ে যাবে। সব ঠিকঠাক চললে দু’দিনের মধ্যেই উত্তরের আকাশ রৌদ্রোজ্জল হয়ে যাবে বলে তাঁর ধারণা। দুদিন ধরে টানা বৃষ্টি চলতে থাকায় পাহাড়-সমতলের অনেক জায়গার স্বাভাবিক জনজীবনে বিঘ্ন ঘটেছে। ১০৫ দিনের বন্ধ ওঠার পরে পুজোর শুরুতে পাহাড় খোলায় পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। কিন্তু, বৃষ্টির কারণে পাহাড়ে যান চলাচল তেমন হচ্ছে না। দোকানপাটও অনেক খুলছে না। মঙ্গলবার পাহাড়ের চকবাজার, ম্যাল রোডের অনেক দোকান বন্ধ ছিল। হকারদের ভিড়ও ছিল কম। বড় মাপের রেস্তোরাঁয় ভিড়ও কম ছিল। চকবাজারের ব্যবসায়ী ত্রিভূবন গিরি বলেন, ‘‘অক্টোবরের সাধারণত এমন টানা বৃষ্টি হয় না। দু’দিনের বৃষ্টিতে কেনাবেচার সমস্যা হচ্ছে।’’
কোচবিহারেও বৃষ্টি চলছে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ কৃষি মৌসম কেন্দ্রের নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ৪ অক্টোবর পর্যন্ত হালকা বৃষ্টি চলবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। তিনি জানান, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কোচবিহারের মুখ্য কৃষি আধিকারিক বুদ্ধদেব ধর বলেন, ‘‘ঘূর্ণাবর্তের কারণেই এমন হচ্ছে।’’ কোচবিহার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, নদীগুলির জলস্তর বাড়ছে কি না সে দিকে সেচ দফতরকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
মালদহে লাগাতার বৃষ্টির জেরে শহরের নানা এলাকায় জল-জঞ্জাল জমে গিয়েছে বলে বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। অভিযোগ, নিকাশি বেহাল হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে। তবে ইংরেজবাজার পুরসভার দাবি, নিয়মিত নর্দমা সাফাই করা হলেও বেশ কয়েকটি এলাকায় বিধি মেনে জঞ্জাল ফেলা হচ্ছে না বলেই সমস্যা বাড়ছে। শিলিগুড়িতেও বৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোড ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় ফাঁকা।
অন্যদিকে টানা ১৫ ঘণ্টা বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়ল রায়গঞ্জ পুরসভার বিভিন্ন এলাকা। রবিবার রাত ১২টা থেকে সোমবার দুপুর তিনটে পর্যন্ত রায়গঞ্জে একটানা ভারি বৃষ্টি হয়। তারজেরে শহরের বেশ কিছু এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যায়। বিভিন্ন এলাকায় বাসিন্দাদের বাড়িতেও জল ঢুকে গিয়েছে।