ডেঙ্গি রুখতে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে গ্রামেগঞ্জে

সাধারণত বর্ষার সময় ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় নিয়মিত বৃষ্টির কারণে ফুলের টব, টায়ার থেকে শুরু করে প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস ছাড়াও নানা জায়গায় পরিষ্কার জল জমে যায়। গুরুত্ব না দেওয়ায় সে সব জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার করেন না বাসিন্দারা। ফলে, স্বল্প সময়ের মধ্যে, ডিম থেকে লার্ভা তৈরি হয়ে মশা ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৮ ০৩:২৪
Share:

উপায়: কোচবিহারে মশা মারতে করা হচ্ছে স্প্রে। নিজস্ব চিত্র

ডেঙ্গি রুখতে শহরের সঙ্গে গ্রামেও নজরদারি শুরু করল স্বাস্থ্য দফতর। পঞ্চায়েতের সঙ্গে যৌথ ভাবে একাধিক দল গড়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে সমীক্ষার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ডেঙ্গি মশা জন্মানোর আশঙ্কা রয়েছে যে জায়গাগুলোতে, সেসব জায়গা পরিষ্কার করা হবে। গত কয়েকবছরের রিপোর্ট পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখেই চলতি বছর থেকে এ কাজে নেমেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত বছর কোচবিহারে ২২৩ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার মধ্যে বড় অংশ ছিল গ্রামের বাসিন্দা। এর পর গ্রামের দিকেও নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডেঙ্গির বাহক এডিশ মশা পরিষ্কার জলে ডিম দেয়। সেখান থেকেই তা ছড়িয়ে পড়ে। শহরের জীবনযাত্রায় বহু জায়গায় পরিষ্কার জল জমে যায়। বর্তমানে গ্রামের জীবনযাত্রাতেও লেগেছে শহরের ছোঁয়া। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে ডেঙ্গি রোগী দেখা যাচ্ছে। তাই গ্রামাঞ্চলেও ডেঙ্গি রুখতে উদ্যোগী হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।” সেই সঙ্গে জারি রাখা হয়েছে নানা সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান। ব্যবহার করা হচ্ছে ট্যাবলোও, যেখান থেকে ডেঙ্গি রুখতে কী করতে হবে, নিয়মিত সেই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালের সুপার জয়দেব বর্মন বলেন, ‘‘ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা এ বার তুলনামূলক ভাবে খুব কম। আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত আছি।’’

সাধারণত বর্ষার সময় ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় নিয়মিত বৃষ্টির কারণে ফুলের টব, টায়ার থেকে শুরু করে প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস ছাড়াও নানা জায়গায় পরিষ্কার জল জমে যায়। গুরুত্ব না দেওয়ায় সে সব জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার করেন না বাসিন্দারা। ফলে, স্বল্প সময়ের মধ্যে, ডিম থেকে লার্ভা তৈরি হয়ে মশা ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে কোচবিহার শহরের সঙ্গে দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, মাথাভাঙা ও মেখলিগঞ্জের মতো মহকুমা শহরেও ডেঙ্গি রোগী নজরে এসেছে। গত বছর কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের ঘুঘুমারি, পানিশালা থেকে শুরু একাধিক গ্রামে ডেঙ্গি রোগী মিলেছিল। তাতেই স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। ওই ব্লকেই ২২ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘তখন থেকেই গ্রামে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত হয়।’’

Advertisement

এবার বর্ষা শুরু হলেও কোচবিহারে বৃষ্টিপাত সে ভাবে হয়নি। সেই কারণেই শ্রাবণ মাসের শেষের দিকেও ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা হাতে গোনা। কিন্তু অগষ্ট মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যাও বাড়বে বলেই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাইরের থেকে কেউ জ্বর নিয়ে এলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, জেলা এবং মহকুমা হাসপাতালের পাশাপাশি গ্রামীণ হাসপাতালগুলোকেও সতর্ক করা হয়েছে। ডেঙ্গি হয়েছে বলে সন্দেহ হলে দ্রুততার সঙ্গে কী কী করতে হবে, সে ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলার বেশির ভাগ অংশই গ্রামাঞ্চল। সেখানে রোগ ছড়িয়ে পড়লে বিপদ বাড়বে। তাই কোনওরকম ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। তাই গ্রামের দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন