ক্ষুব্ধ রোগীদের পরিবার

ওষুধ পেতে দেরি, ভাঙচুর হাসপাতালে

দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ওষুধ না মেলার অভিযোগে কাউন্টারে ইট মেরে ভাঙচুর চালাল ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবারের লোকেরা। বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওষুধ বিলির কাউন্টারে ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩০
Share:

দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ওষুধ না মেলার অভিযোগে কাউন্টারে ইট মেরে ভাঙচুর চালাল ক্ষুব্ধ রোগীর পরিবারের লোকেরা। বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওষুধ বিলির কাউন্টারে ঘটনাটি ঘটেছে। হাসপাতাল থেকে অধিকাংশ ওষুধই এখন দেওয়া হয় বলে লাগোয়া ওষুধের দোকানগুলিতে বিক্রি কমছে। তাদের সহায়তা করতেই যোগসাজশ করে কর্মী-আধিকারিকদের একাংশ হাসপাতালের ওষুধ বিলির ব্যবস্থা ব্যাহত করার চেষ্টা করছেন বলে রোগীর পরিবারের একাংশের সন্দেহ।

Advertisement

রোগীর পরিবারের কয়েক জনের অভিযোগ, দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর ওষুধ না পেয়ে কাউন্টারে বললে সেখান থেকে কর্মীরা জানান, তাঁরা কিছু জানেন না। সুপারকে যেন বলা হয়। কখনও বলা হয় যেখানে তাড়াতাড়ি হবে সেখানে যান। তাতেই রোগীর পরিবারের অনেকের সন্দেহ বেসরকারি ওষুধের দোকানগুলির সুবিধা করে দিতেই ইচ্ছে করে সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে। এ দিন ভিড় থাকলেও ওষুধ দেওয়ার সমস্ত কাউন্টার খোলা হয়নি বলে অভিযোগ। বারবার বলা হলেও কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেননি। এর পরেই উত্তেজিত বাসিন্দারা ইট দিয়ে বন্ধ করে রাখা কাউন্টারগুলির ঢাকনা ভেঙে দেন। কাউন্টারের ভিতরে ইট পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। ফার্মাসিস্টরা হাসপাতাল সুপারের কাছে অভিযোগ জানালে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

হাসপাতাল সুপার নির্মল বেরা বলেন, ‘‘প্রয়োজনের তুলনায় ফার্মাসিস্ট না থাকাতেই সমস্যা হচ্ছে। স্টোরকিপার পদে ফার্মাসিস্টদের দিয়েই কাজ চালাতে বলা হয়েছে। সেখানে চার জনকে দায়িত্ব দিতে হয়েছে। এক জন দীর্ঘ দিন ধরে অফিসের কাজে যুক্ত। বাকিদের দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে।’’

Advertisement

হাসপাতালের ওষুধ বিলির ঘরে ১০টি কাউন্টার রয়েছে। কখনও চারটি, কখনও ৬টি খোলা থাকে বলে অভিয়োগ। বাকি কাউন্টারগুলি কাঠের বোর্ড দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ১২০০ থেকে ১৪০০ রোগী আসেন। তাঁদের অধিকাংশ ওষুধ নিতে যান। কিন্ত নিরাপত্তা রক্ষী না থাকায় সেখানে সঠিক লাইন বা নিয়ম মানা হয় না বলে অভিযোগ। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ইউনিটের সম্পাদক সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বাইরের ওষুধের দোকানকে সুবিধা করে দিতে কেউ এমন করছে কি না তা তদন্ত করে দেখতে হবে। তবে আগের তুলনায় কাউন্টার থেকে অনেক বেশি ওষুধ সরবরাহ হচ্ছে। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে বিষয়টি তুলব।’’

মহম্মদ সাহেদ, সুনীতা মাহাতো, জিতেন মাহাতোদের মতো রোগী এবং তাঁদের পরিবারের লোকেরা জানান, অনেক ক্ষণ ধরে ওষুধের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। অনেকেই ভিড় করে ছিলেন। কোনও লাইন ছিল না। সব মিলিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ তাঁরা ওষুধ পান। কাউন্টারের ফার্মাসিস্টদের কয়েক জন জানান, রোগীর চাপ রয়েছে। অথচ কর্মী কম। এ দিন ছ’টি কাউন্টার খোলা ছিল। তার মধ্যে ওষুধ নিতে এসে লাইন করে না কেউ। কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা রক্ষী দিয়ে লাইনের ব্যবস্থা করাতে বলেছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন