কুকুর-বিড়ালের সঙ্গে মুখ বাড়ায় শুয়োরও

সরকারি হাসপাতাল চত্বরে কুকুর বেড়ালদের দাপিয়ে বেড়ানো দেখতে অভ্যস্থ এ রাজ্যের মানুষ। এমনকি ওয়ার্ডগুলিতে তাদের অবাধ বিচরণও দেখলেও বিশেষ অবাক হন না কেউ।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৬ ০১:১৭
Share:

সরকারি হাসপাতাল চত্বরে কুকুর বেড়ালদের দাপিয়ে বেড়ানো দেখতে অভ্যস্থ এ রাজ্যের মানুষ। এমনকি ওয়ার্ডগুলিতে তাদের অবাধ বিচরণও দেখলেও বিশেষ অবাক হন না কেউ। কিন্তু মানুষের থেকে বেশি শূয়োরের উপস্থিতি আর তাদের দাপাদাপিই আলাদা করে চিনিয়ে দেয় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালকে।

Advertisement

জলপাইগুড়ি হাসপাতাল চত্বরে কার্যত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শুয়োরের পাল৷ হাসপাতালের অন্তঃর্বিভাগের পেছন দিকে, অর্থাৎ প্যাথোলজি বিভাগের ঠিক পাশে থাকা ভ্যাটে তো তাদেরই রাজ৷ একই ভবনে প্যাথোলজি বিভাগের পাশেই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড৷ সাফাই কর্মীরা প্যাথোলজি বিভাগের পাশের দরজা দিয়ে বেড়িয়েই ভ্যাটে হাসপাতালের যাবতীয় আবর্জনা ফেলেন৷ এর জন্য দরজাটা দিনভর খোলা থাকায় কখনও কখনও শুয়োরের পাল হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডেও ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ রোগীর আত্মীয়দের৷ তাদের এই দাপটের পাশাপাশি কুকুর-বেড়ালদের বিচরণও অক্ষুন্ন৷ আর হাসপাতালের আউটডোরে? বারান্দায় বিভিন্ন বিভাগের রোগীদের ভিড়ে নিত্যই দেখা যায় একাধিক ছাগলকে৷

প্যাথোলজি বিভাগ লাগোয়া যে ভ্যাটে শুয়োরদের রাজ, সেখানকার দুর্গন্ধতেও টেকা ভার৷ অভিযোগ, হাসপাতালের ওই ভ্যাটে প্রতিদিনই বর্জ্য পদার্থের স্তুপ জমা হলেও, সাফাই হয় না নিয়মিত। তাই বড় একটা অংশই সেখানে পড়ে থাকে৷ ফলে সেখান থেকেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে প্যাথোলজি বিভাগ সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে৷ যদিও হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্করের দাবি, “ভ্যাট পরিষ্কারের দায়িত্ব একটি সংস্থাকে দেওয়া রয়েছে৷ তারা প্রতিদিনই তা পরিষ্কার করছে৷” যদিও শুয়োরের দাপাদাপি নিয়ে নিরুত্তর হাসপাতাল কর্তা৷

Advertisement

জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন৷ চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েও হাসপাতালের অন্দরে রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে প্রচুর অভিযোগ৷ জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর এলাকার বাসিন্দা যোগেন বর্মনের কথায়, “আমার স্ত্রীর ঘাড়ে একটি টিউমার ধরা পড়েছিল৷ হাসপাতালে এসে চিকিৎসককে দেখানোর পর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলেন৷ কিন্তু সেই সব পরীক্ষা করতেই দেড় মাস কেটে গেল৷ তারপর হাসপাতাল থেকে অস্ত্রোপচারের দিন ঠিক হল৷” যোগেনবাবুর স্ত্রী এই মুহুর্তে হাসপাতালেই ভর্তি৷ দুই একদিনের মধ্যেই তাঁর অস্ত্রোপচার হবে৷

কারও কারও অভিযোগ, এক্স-রে নিয়ে। কারও অভিযোগ আল্ট্রাসোনগ্রাফি নিয়ে৷ এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেই দেরীরই অভিযোগ৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক্স-রে নিয়ে কোনও অভিযোগ মানতে না চাইলেও আল্ট্রা সোনগ্রাফির অভিযোগটি মেনে নিয়েছেন৷ গয়ারামবাবুর কথায়, ‘‘হাসপাতালে আল্ট্রাসোনোগ্রাফির একটি মেশিনই রয়েছে৷ যেখানে প্রতিদিন অন্তত পঞ্চাশ থেকে ষাট জন রোগীর ভীড় হয় ৷ তাই একটু সময় তো লাগবেই ৷’’

জলপাইগুড়ির বাসিন্দারা চাইছেন, যেটুকু পরিকাঠামো রয়েছে তার মধ্যেই জেলার এই প্রধান হাসপাতালে একটু স্বাস্থ্যকর পরিবেশে যেন চিকিৎসা পান তাঁরা৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন